আইনের চোখে সকলেই সমান। কিন্তু আইন ভাঙার শাস্তিও কি সকলের জন্য সমান? ঠিক এই প্রশ্নটি নিয়েই চিন্তিত নরওয়ে প্রশাসন। কারণ এবার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর। সম্প্রতি করোনা অতিমারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে খোদ প্রধানমন্ত্রী এর্না সোলবার্গের বিরুদ্ধে। তিনি অভিযোগ স্বীকারও করেছেন। অনেক ভেবেচিন্তে শেষ পর্যন্ত আর্থিক জরিমানা দাবি করেছে নরওয়ে প্রশাসন। জরিমানা দিতে স্বীকৃত হয়েছেন সোলবার্গও।
গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবল করোনা দাপটের মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নরওয়েতে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এলেন এর্না সোলেনবার্গ। এতদিন করোনা মোকাবিলায় তাঁর কড়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে সারা পৃথিবীই। কিন্তু এবার সেই আইন না মানার অভিযোগ উঠল খোদ তাঁরই বিরুদ্ধে। তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ১৩ জন আমন্ত্রিত অতিথির সঙ্গে একটি ছবি প্রকাশ করে নরওয়ের গণমাধ্যম। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী সেদেশে কোনো অনুষ্ঠানেই ১০ জনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। সোলেনবার্গের এই ছবি প্রকাশ পেতেই পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করে গণমাধ্যমগুলি।
ইতিমধ্যে সোলেনবার্গ অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন। সেইসঙ্গে প্রশাসনের ঠিক করে দেওয়া যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে মেনে নেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। সাধারণত এই ক্ষেত্রে পুলিশ কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় না। কিন্তু নরওয়ে প্রশাসনের ক্ষেত্রে, আইন সকলের জন্য সমান হলেও আইন ভাঙার শাস্তি সকলের জন্য সমান হবে এমন কোনো মানে নেই। বিশেষ করে একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীই যখন আইন ভাঙছেন, তখন কিছুটা বেশি দায়িত্ব থেকেই যায়। সেই দৃষ্টান্ত তৈরি করতেই সোলেনবার্গের জরিমানার রায় দিয়েছে বিশেষ প্রশাসনিক আদালত। প্রধানমন্ত্রী সোলেনবার্গ সেই জরিমানা স্বীকারও করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে যখন নানা দেশের রাষ্ট্রনায়করা প্রশাসনকে প্রায় ক্রীড়নকের মতো ব্যবহার করছে, তখন এমন দৃষ্টান্ত সত্যিই অবাক করে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
টিকা নিলেই নিশ্চিন্ত নয়, আবারও ঘটতে পারে করোনা সংক্রমণ