বহু জল্পনা, চাপান-উতোরের পর অবশেষে স্থির হয়েছে টোকিও অলিম্পিকের দিনক্ষণ। দেশে দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতিও। তবে করোনা আতঙ্ক এখনও মানুষের পিছু ছাড়েনি। একদিকে ভ্যাকসিনের নির্ভরযোগ্যতার অভাব, অন্যদিকে ভাইরাসের নতুন নতুন মিউটেশন। আর এর মধ্যেই অলিম্পিকের আসর থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ইতিমধ্যে উঠে আসছে নানা রাজনৈতিক সমীকরণের কথাও।
১৯৮৮ সালে ঠান্ডা যুদ্ধের আবহে অলিম্পিক বয়কট করেছিল উত্তর কোরিয়া। তারপর এই প্রথম। এর ফলে অলিম্পিকে পদকজয়ের সম্ভাবনা তো থাকলই না উত্তর কোরিয়ার। তার থেকেও বড়ো বিষয়, এই খেলার আয়োজনের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের রাজনৈতিক সমঝোতার একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। সেই সম্ভাবনাও একেবারে হারিয়ে গেল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ২০১৮ সালের উইন্টার অলিম্পিকে যে রাস্তা খানিক প্রশস্ত হয়েছিল, তা আবার হারিয়ে যাবে।
করোনা আবহে অলিম্পিকের আয়োজন নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিলই। ২০২০ সালের খেলা পিছিয়ে দেওয়া হয় ২০২১ সালে। অবশেষে ২৩ জুলাই থেকে টোকিও অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হবে বলে স্থির হয়েছে। তবে এর মধ্যে উত্তর কোরিয়ায় এখন কোনো করোনা রোগী নেই। বাইরের বিশ্বের নিরিখে যা একরকম অসম্ভব বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। আর সেই কারণেই বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অলিম্পিকের সূত্রে খেলোয়াড়রা করোনা সংক্রমণের শিকার হলে তার প্রভাব পড়বে সারা দেশেই। তাই গত ২৫ মার্চ অলিম্পিক কমিটির আলোচনায় সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এমনটাই জানিয়েছে ক্রীড়া বিভাগ।
তবে অলিম্পিক কমিটির বক্তব্য অনুযায়ী, এই নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি তাঁদের সঙ্গে। এমনকি উত্তর কোরিয়া ক্রীড়া বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা উত্তর দেননি বলেও অভিযোগ তুলেছে অলিম্পিক কমিটি। এই চাপান-উতোরের মধ্যেও একটা জিনিস পরিষ্কার। এবারের অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়া কোনোভাবেই খেলছে না। খেলার ইতিহাসে তো বটেই, রাজনীতির ইতিহাসের উত্তর কোরিয়ার এই সিদ্ধান্ত বেশ সাহসী।
আরও পড়ুন
অলিম্পিকে প্রথমবার কোনো ভারতীয় দম্পতি, ইতিহাস তৈরির পথে অতনু-দীপিকা
Powered by Froala Editor