সম্পূর্ণ বিলুপ্তির মুখে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের দৈত্যাকার তিমির প্রজাতি

প্রায় তিন শতাব্দী ধরে লড়াই করবার পরে অবশেষে হয়তো হার মানতে হচ্ছে তাদের। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের ‘রাইট হোয়েলস’ তিমির প্রজাতিকে বিলুপ্তির থেকে মাত্র ‘এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে থাকা’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা (আই ইউ সি এন)। আই ইউ সি এন গত সপ্তাহে তাদের লাল তালিকায় এই রাইট হোয়েলস তিমির প্রজাতিকে ‘বিপন্ন’ থেকে ‘অতি বিপন্ন’ পর্যায়ে স্থানান্তরিত করেছে, যার অর্থ এটি যে-কোনো প্রজাতির সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ঠিক আগের পর্যায়।

এই অতিবিপন্ন পর্যায়ে সাধারণত কোনো প্রজাতিকে তখনই ফেলা হয় যখন মোটামুটি তাদের মাত্র ৪০০টি প্রাণী বেঁচে থাকে এং যাদের মধ্যে পূর্ণবয়স্কদের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫০-এরও কম।

ম্যাসাচুসেটস স্টেলওয়াগেন ব্যাঙ্কের জাতীয় সামুদ্রিক অভয়ারণ্যের গবেষক ডেভিড উইলির মতে, বহু বছর ধরেই এই বিরল প্রজাতির তিমিদের বাঁচিয়ে চলার জন্য কাজ করে চলেছেন তাঁরা। কিন্তু বারবার সতর্ক করার পরেও সেই ভাবে কোনো সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই অতিবিপন্ন পর্যায়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ না খুললে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

কিন্তু কেন সংকটের মুখে পড়ল এই বিশালাকার তিমির দল? বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশাল শরীরের জন্য তিমিগুলির গতিবিধি অত্যন্ত ধীর। তাই শিকারিদের পক্ষে তাদেরকে শিকার করা সহজ হয়। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে শেষ দশকে ব্যাপকভাবে তিমি শিকার বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে প্রায় অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছে এই বিশালাকার তিমির দল।

আরও পড়ুন
বর্জ্যের সঙ্গে ভেসে এল অন্তত ২০টি কচ্ছপের মৃতদেহ, চাঞ্চল্য কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে

এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃতভাবেই কোনো কোনো মাছ ধরার জাহাজের অত্যন্ত শক্তিশালী জালে আটকে পড়ে এই তিমির দল এবং ফলস্বরূপ মৃত্যু হয় তাদের। যদিও এই জালের প্রকৃতি পরিবর্তন করতে বর্তমানে নতুন আইন আনা হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ব্যাপক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ১৯৯০ সাল থেকেই উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে তিনগুণ দ্রুত হারে। এই আচমকা জলবায়ুর পরিবর্তনে মানিয়ে নিতে না পেরে অনেকাংশেই ধ্বংস হতে চলেছে এই প্রজাতি, জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

আরও পড়ুন
বিলুপ্তির পথে কচ্ছপ ও কাছিমের অধিকাংশ প্রজাতি, চিন্তিত প্রাণীবিদরা

Powered by Froala Editor

Latest News See More