সলমন রুশদির কাছে তিনি 'অপদার্থ', সাহিত্যে নোবেল পেলেন পিটার হ্যান্ডকে

অবশেষে অপেক্ষার অবসান। একে একে ঘোষণা হচ্ছে এ-বছরের নোবেল প্রাপকদের নাম। প্রত্যেক বছরের মতই বিশ্বের বহু মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বিভিন্ন বিভাগের নোবেল প্রাপকদের নাম জানার জন্যে।

এ-বছর সাহিত্যে নোবেল পেলেন অস্ট্রিয়ার লেখক পিটার হ্যান্ডকে। গত বছর এই বিভাগে কোনো পুরস্কার প্রদান করা হয়নি। তাই ২০১৮ সালের সাহিত্যে নোবেলটি দেওয়া হল পোল্যান্ডের লেখিকা, কবি ৫৭ বছর বয়সী ওলগা তোকারসুককে। ২০১৮ সালে তোকারসুক পেয়েছিলেন বুকার পুরস্কার। সমকালীন সময়ে পোল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে ধরা হয় তোকারসুক-কে। তাঁর ঐতিহাসিক উপন্যাস 'দ্য বুক অব জ্যাকব' এর জন্যেই তাঁকে নোবেল দেওয়া হয়।

জার্মান ভাষার বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তক হ্যান্ডকের জন্ম সোভিয়েত অধিকৃত বার্লিনে, ১৯৪২ সালে। পরবর্তীকালে বসবাস অস্ট্রিয়ায়। বিখ্যাত বই 'আ সরো বিয়ন্ড ড্রিমস' প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে। নোবেল কমিটির সদস্যরা জানান, হ্যান্ডকের 'ডাই অবসডাইবিন' পড়েও তাঁরা অভিভূত হন। যুগস্লাভিয়া যুদ্ধের সমালোচনা করে তাঁর লেখা সারা পৃথিবীতে সমালোচনার ঝড় তোলে। যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল নিয়ে বারবার পশ্চিমী দুনিয়ার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন পিটার। 

হ্যান্ডকের নোবেলপ্রাপ্তি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্কও। স্বৈরাচারী শাসক স্লাভোদান মিলোস্লোভিচের সমর্থক ছিলেন তিনি। বিখ্যাত সাহিত্যিক সলমন রুশদি ১৯৯৯ সালে তাঁকে ‘ইন্টারন্যাশানাল মোরন অব দ্য ইয়ার’-ও বলেছিলেন। হ্যান্ডকের নোবেলপ্রাপ্তির খবর শুনে রুশদির বক্তব্য, তিনি হ্যান্ডকের সম্পর্কে আগে যা বলেছিলেন, তাতেই বিশ্বাস করেন এখনও।

অন্যদিকে, এ-বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেলেন তিনজন। তাঁরা হলেন, টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের  জন বি গুডএনাফ, বিংহ্যামটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যানলি হুইটিংহ্যাম এবং নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটির আকিরা ওশিনো। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির প্রভূত উন্নতির কারণে এঁরা এই পুরস্কার পেলেন। এই ধরণের হালকা ব্যাটারি মোবাইল ফোন থেকে গাড়িতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

পদার্থ বিদ্যায় এ বছর নোবেল পেলেন তিনজন। ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে তাত্ত্বিক গবেষণার কারণে নোবেল পেলেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পিব্লিস। এছাড়া সোলার সিস্টেমের বাইরের একটি গ্রহের অপর একটি নক্ষত্রের চারদিকে প্রদক্ষিণ করার হদিশ দিয়ে নোবেল পুরস্কার পেলেন জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল মেয়র ও দিদিয়ের কুয়েলজ। এর থেকে ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির নতুন তথ্য ও ইতিহাস জানা গেল। আমাদের চেনা সোলার সিস্টেমের বাইরে অন্য একটি গ্রহের সূর্যের মতই একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করার প্রমাণ উসকে দেয় সেই চিরাচরিত জিজ্ঞাসাকে - হয়ত বহু আলোকবর্ষ দূরে কোনো গ্রহে সত্যিই প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে।