বিশ্বের ইতিহাসে ‘গ্রেটেস্ট মাইন্ড’ হিসাবে পরিচিত আইনস্টাইনের গল্প তো প্রায় সকলেই জানা। ছোটবেলায় মিউনিখ শহরে বারবার বিদ্যালয় বদল করতে হয়েছিল আইনস্টাইনকে। কারণ অমনোযোগিতা এবং খারাপ গ্রেড। বারবারই পরীক্ষার ফলাফলে থাকত লাল কালির দাগ। তবে একা আইনস্টাইনই নন, নোবেলজয়ী গবেষক টমাস লিন্ডালের জীবনেও ঘটেছিল এমন ঘটনাই।
গতকালই ৮৩ বছর বয়সে পা দিলেন এই ব্রিটিশ-সুইডিস বিজ্ঞানী। ২০১৫ সালে ক্যানসার এবং জিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণার জন্য রসায়ন বিভাগে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। অথচ মজার বিষয় এই রসায়নেই তিনি আটকে গিয়েছিলেন উচ্চ বিদ্যালয়ে। সম্প্রতি সেই কথাই স্মৃতিচারণ করেন ডঃ লিন্ডাল।
তবে লিন্ডালের ক্ষেত্রে বিষয়টি ছিল একটু অন্যরকমই। পড়াশোনায় যে খুব খারাপ ছিলেন স্কুলস্তরে, এমনটা একেবারেই নয়। স্কুলের এক শিক্ষকের সঙ্গে তাঁর মতের অমিলই তিক্ত করে তুলেছিল সম্পর্ক। আর সম্পর্কের সেই অবনতিই এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে বছরের শেষে তিনি খানিকটা ইচ্ছাকৃতভাবেই ফেল করিয়ে দেন লিন্ডালকে। খানিক মজা করেই লিন্ডাল বলেন, তিনিই পৃথিবীর একমাত্র রসায়নবিদ যাঁর ঝুলিতে রয়েছে রসায়নে নোবেলের সঙ্গে ফেল করার রেকর্ডও।
১৯৩৮ সালে সুইডেনের স্টকহোমে জন্ম লিন্ডালের। হাল্টবার্গের এক হাইস্কুলে পড়াশোনা তাঁর। তবে স্কুলের সেই ঘটনার কারণে বয়সের নিরিখে সহপাঠীদের থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়েই ছিলেন লিন্ডাল। ১৯৬৭ সালের স্টকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি সম্পূর্ণ করেন তিনি। ১৯৭০ সালে এমডি করেন রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই নোবেলজয়ীকে। একের পর এক উল্লেখযোগ্য গবেষণার জন্য পেয়েছেন রয়্যাল সোসাইটির ফেলোশিপ থেকে শুরু করে নরওয়েজিয়ান অকাদেমি পুরস্কার। এবং নোবেল তো বটেই।
নিজেও একজন অধ্যাপক তিনি। অধ্যাপনার ক্ষেত্রেই যে উদারমনা হতে পারাই আসল চ্যালেঞ্জ, এমনটাই উল্লেখ করেন তিনি। উল্টোদিকে লিন্ডালের জীবনের এই গল্প অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে হাজার হাজার তরুণ-তরুণীকে। অধ্যাবসায় আর ধৈর্য্যের ওপর নির্ভর করে যে সবকিছুকেই জয় করা সম্ভব, তারই যেন জলজ্যান্ত প্রমাণ লিন্ডাল।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘মেসন’ কণার ধারণা দিয়েও নোবেল পাননি বিজ্ঞানী দেবেন্দ্রমোহন বসু