ঘূর্ণিঝড় আমফান কেড়ে নিয়েছে বেঁচে থাকার সমস্ত রসদ। কারোর গোয়াল ভেঙেছে, ঝড়ে পড়ে গিয়েছে কারোর আম গাছ। বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি নষ্ট হয়ে গিয়েছে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে। আর এর মধ্যেই কোনরকমে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সুন্দরবনের মানুষ। তাঁদের কাউকেই না চিনলেও, এক সময় তো এই দেশের বুকেই কেটেছে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলেবেলা। তাই প্রত্যেক বাঙালিকেই তিনি নিজের আত্মীয় মনে করেন এখনও। আর সেই আত্মীয়ের দুর্দশায় তাঁর প্রাণ তো কাঁদবেই। সুদূর বস্টন শহরে থেকেও তাই দুর্গত মানুষদের জন্য সাহায্যের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ।
পশ্চিমবঙ্গের ভূভাগ থেকে তখনও বিদায় নেয়নি আমফান। তার মধ্যেই ফোন এল লিভার ফাউন্ডেশন ওয়েস্ট বেঙ্গলের সম্পাদক অভিজিৎ চৌধুরীর কাছে। ফোনের ওপারে আরেক অভিজিৎ। সামাজিক মাধ্যমে ঝড়ের তাণ্ডবলীলা দেখে আর তিনি স্থির থাকতে পারেননি। ফোন করে তাই অভিজিৎ চৌধুরীকে নির্দেশ দিলেন ত্রাণকার্য শুরু করতে। ঝড়ের তাণ্ডবের পর প্রথম প্রয়োজন খাবার এবং আশ্রয়। তাই গড়ে তুলতে হবে কমিউনিটি কিচেন।
দেশে করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন শুরু হওয়ার পরপরই রাজ্যের নানা প্রান্তে কমিউনিটি কিচেন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে লিভার ফাউন্ডেশন ওয়েস্ট বেঙ্গল। অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক এবং হতদরিদ্র মানুষের মুখের ভাত নিশ্চিত করেছে এই সংস্থা। আর দূর প্রবাসে থেকেও তার তত্ত্বাবধান করে গিয়েছেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। আমফান পরবর্তী সময়ে সেই কাজকেই আরও খানিকটা প্রসারিত করতে চেষ্টা করেছেন এই বাঙালি নোবেলজয়ী।
এছাড়াও আমফান মোকাবিলায় রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় উপদেশ দিয়েছেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত তাঁর কথার সূত্রেই সরাসরি দুর্গত মানুষদের কাছে ক্ষতিপূরণের অর্থ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও বন্ধন ব্যাংকের বিশেষ পরিষেবার ব্যাপারে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে শুধুই বাংলা নয়, সারা পৃথিবীর এই দুর্দিনে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন অভিজিৎ বাবু। করোনা বিপর্যস্ত অর্থনীতি মোকাবিলা করার জন্য তৈরি করেছেন গ্লোবাল অ্যাডভাইসারি কমিটি। কিন্তু সব কাজ সামলেও, যেখানে নাড়ির টান সেখানে ফিরে আসে মন।
আরও পড়ুন
আজ সন্ধেতেই নোবেল পদক পাচ্ছেন অভিজিৎ আর ডুফলো, পুরস্কারমূল্য দান করবেন গবেষণা-খাতে
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
অভিজিতের 'স্ত্রী' নন, নোবেল পেয়েছেন 'অর্থনীতিবিদ' এস্থার ডুফলো