উত্তর কলকাতা মানেই সাবেকি পুজোর আমেজ। ঢাকের আওয়াজ, চিরাচরিত প্রতিমা আর পাড়ার আড্ডা। আর এই পুজোগুলোর মধ্যেই অন্যতম বাগবাজার সর্বজনীন। আড্ডার জন্য তো বটেই, পাশাপাশি বাগবাজারের বিশেষ আকর্ষণ হল বিজয়ার দিন সিঁদুর খেলা। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য সেই সামগ্রিক ছবিই বদলে যাচ্ছে এই বছর।
বাগবাজার সর্বজনীনের টানে শুধু কলকাতাই নয়, দূর-দূরান্ত থেকেই ছুটে আসে মানুষের ঢল। কিন্তু মহামারীর সময় সেই ভিড় হলে সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব কি? পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বারবার সরকার থেকে বলে দেওয়ার পরেও তা নিয়ন্ত্রণ করা কার্যত অসম্ভব। তাই এ-বছর বাগবাজার মণ্ডপ প্রাঙ্গণের দরজা বন্ধ থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য। ঠাকুর দেখতে হলে বাইরে থেকেই দেখে বিদায় জানাতে হবে তাঁদের।
বাগবাজার পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতম নিয়োগী প্রহরকে জানালেন, “প্রতিবছরের মতোই পুজোর সূচি থাকছে অপরিবর্তিত। তবে এই বছর সকলের জন্যই প্রবেশ নিষিদ্ধ। পল্লীবাসীদের জন্যও। মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। এমনকি পুজো কমিটির যে সদস্যরা অঙ্গাঙ্গিকভাবে পুজোর সঙ্গে জড়িত নন, তাঁদেরও প্রবেশ করার অনুমতি থাকছে না।”
মণ্ডপে প্রবেশ যেমন বন্ধ তেমনই বন্ধ রাখা হয়েছে সিঁদুর খেলা। ২০২০-তে ১০২ বছরে পা দিয়েছে বাগবাজার সার্বজনীন। তবে এই শতাব্দীপ্রাচীন পুজোয় এর আগে একবারের জন্যেও বন্ধ হয়নি সিঁদুরখেলা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রথমবারের জন্য ছেদ পড়তে চলেছে সেই রীতিতে।
এ-বছর বিসর্জনের রংও একেবারেই সাদামাটা। থাকছে না কোনো জাঁকজমক। কোনোরকম শোভাযাত্রাই অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এই পরিস্থিতিতে। প্রতিমা নিরঞ্জনের পথে সঙ্গ দেবে না মানুষের ঢল। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরিয়ে দেখানোর রীতি আছে এই শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের। তবে মণ্ডপ থেকে দেবীকে নিয়ে সরাসরিই গঙ্গার ঘাটে পৌঁছাবে যাত্রা। মাঝে কোথাও দাঁড়াবে না গাড়ি। এমনটাই জানালেন গৌতমবাবু। বাগবাজারের আড্ডা, সিঁদুর খেলা থেকে শুরু করে আবার সমস্ত আমেজই তোলা থাকছে পরের বছরের জন্য। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর পুরনো ছন্দে আবার ফিরবে বাগবাজার, আশায় আপামর কলকাতাবাসী...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
পুজোয় বন্ধ ম্যাডক্স স্কোয়ারের বিখ্যাত আড্ডা; বাদ দর্শনার্থীরাও?