বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই সরবরাহ করছেন নিকোলা টেসলা! কোথায়?

বিদ্যুতের জগতের শুরুটা যদি হয় এডিসনের হাতে, তাহলে তাকে পরিণত করেছিলেন নিকোলা টেসলা (Nikola Tesla)। দুই কিংবদন্তির রেষারেষির ইতিহাস নিয়ে যতই চর্চা হোক, তাঁদের আবিষ্কারকে বাদ দিয়ে আজ আমাদের চলার কোনো রাস্তা নেই। তবে এডিসনের মতোই টেসলারও অনেক গবেষণা সম্পূর্ণ হয়নি। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাটি হল তারহীন বিদ্যুৎ পরিবহন। কেউ কেউ অবশ্য বলেন, টেসলা যতদূর এগিয়েছিলেন তাতে আর একটু সাহায্য পেলেই গবেষণা শেষ করতে পারতেন। কিন্তু সে যাই হোক, এখন যদি বলা হয় আজও টেসলা দাঁড়িয়ে আছেন মানুষকে তারহীন ইন্টারনেট পরিষেবা দিতে? অবাক হবেন নিশ্চই। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে সত্যিই রয়েছে টেসলার এমন একটি পূর্ণাঙ্গ মূর্তি। সেই মূর্তি আসলে একটি ওয়াই-ফাই ছাড়া কিছু নয়।

টেসলার জীবনের অন্যতম বড়ো কীর্তি তাঁর তারহীন বৈদ্যুতিক বালব। এই বালব থেকেই সম্পূর্ণ তারহীন বিদ্যুৎ পরিকল্পনার সূত্রপাত। ক্রমশ তেমন একটি জেনারেটর তৈরির কাজও এগোচ্ছিল। কিন্তু সেই গবেষণা আর সম্পূর্ণ হয়নি। ১৯৪৩ সালে মৃত্যু হল টেসলার। আর তার প্রায় ৩ দশক পর পৃথিবী প্রথম তারহীন টেলিফোনের সাক্ষী হল। তবে এই সমস্তটার শুরু সেই বৈদ্যুতিক বালব থেকেই। সিলিকন ভ্যালির এই মূর্তিটির হাতেও রয়েছে তেমনই একটি বালব। আর সেই বালবই আসলে একটি ওয়াই-ফাই রাউটার। সেখান থেকে প্রতি মুহূর্তে ইন্টারনেট সিগন্যাল ছড়িয়ে পড়ছে। এবং তা অবশ্যই তারহীন। ২০১৩ সালে নর্দার্ন ইম্যাজিনেশন কোম্পানির উদ্যোগে তৈরি হয় মূর্তিটি। আর এর পিছনে খরচ পড়েছিল প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার মার্কিন ডলার।

বিখ্যাত শিল্পী টেরি গুয়েরারের তৈরি মডেলের উপর ভিত্তি করে ৩-ডি প্রিন্টিং-এর সাহায্যে তৈরি হয় সম্পূর্ণ মানবায়তনের এই মূর্তিটি। আর এখানে ওয়াই-ফাই রাউটারটির নির্মাণেও কাজে লাগানো হয়েছে টেসলারই সূত্র। এই যন্ত্র চালানোর জন্য কোনো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয় না। বালবের মধ্যে থাকা টাইম ক্যাপসুলের থেকেই শক্তি সংগ্রহ করে যন্ত্রটি। আর ঠিক ২০৪৩ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়ু এই টাইম ক্যাপসুলের। যেদিন টেসলার মৃত্যুর শতবর্ষ পূর্ণ হবে। সেদিন আবার নতুন টাইম ক্যাপসুল লাগাতে হবে যন্ত্রটিতে। অথবা সত্যিই ততদিনে সম্পূর্ণ হবে টেসলার স্বপ্ন। কোনোরকম তারের সাহায্য ছাড়াই দূরের কোনো বিদ্যুৎ উৎস থেকে সেদিন বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে টেসলার হাতে ধরা বালবটির ভিতরে। আপাতত তাঁর সন্ধান পেতে গেলে সিলিকন ভ্যালিতে পা রাখতেই হবে।

Powered by Froala Editor

Latest News See More