বাজির ব্যবহার রুখতে পথে পরিবেশকর্মীরা, অভিযোগের জন্য চালু হেল্পলাইনও

কালীপুজোর মরশুমে যে কোনো ধরণের বাজির কেনাবেচাই সম্পূর্ণ বন্ধ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর তাতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও পরিবেশ দপ্তরের আধিকারিকরা। তবে সত্যিই কি স্বস্তির পরিস্থিতি রাজ্যে? শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পরেও থেকে যাচ্ছে নিয়ম ভেঙে বাজি জ্বালানো ও কেনাবেচার সম্ভাবনা। এই মহামারীর আবহে মানুষকে সচেতন করতেই তাই পথে নামলেন পরিবেশকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকরা।

মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতি এবং সবুজ মঞ্চ, এই দুই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগেই চলছে প্রচার। সাধারণ মানুষের কাছে একদিকে যেমন তাঁরা আবেদন রাখছেন আতশবাজি না জ্বালানোর, তেমনই পৌঁছে দিচ্ছেন বাজির ক্ষতিকর প্রভাবগুলি। মানুষকে সচেতন করতে হাওড়া জেলার একাধিক অঞ্চলে আয়োজিত হচ্ছে পথযাত্রা, সভা। মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে মানুষকে। পাশাপাশি দেওয়ালে দেওয়ালে পড়ছে পোস্টারও। 

তবে কলকাতা হাইকোর্টের রায় ঘোষণার বহু আগে থেকেই নেওয়া হয়েছিল এই উদ্যোগ। মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির সম্পাদক জয়িতা কুণ্ডু জানালেন, “দুর্গাপুজোর আগে থেকে এই উদ্যোগ নিয়েছিলাম আমরা। গ্রামীণ থানাগুলির পুলিশ সুপারদের কাছে জমা দিয়েছিলেন ডেপুটেশন। উৎসবের এই মরশুম দূষণমুক্ত রাখতেই জয়পুর থানার সঙ্গে যৌথভাবে আমরা প্রচার চালিয়েছিলাম। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে প্রচার।”

গত ৮ নভেম্বর উলুবেড়িয়ায় জনসচেতনামূলক একটি প্রচারে নেমেছিলেন মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির কর্মীরা। স্থানীয় প্রশাসনও যাতে এই উদ্যোগে সাহায্য করেন তাঁদের, সেই মর্মে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয় পুলিশ সুপারের কাছে। এই প্রচারের পরই তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে হাত বাড়ায় একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এগিয়ে আসে সবুজমঞ্চও। আগামীকাল প্রশাসনের সঙ্গে আরও একটি যৌথ ক্যাম্পেন চলবে শ্যামপুর থানা এলাকায়। 

“এছাড়াও সবুজমঞ্চের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আমরা একটি কন্ট্রোলরুম চালু করেছি। ১৪ নভেম্বর বিকাল ৫টা থেকেই খোলা হবে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর। যোগাযোগ করা যাবে মাধবপুর পরিবেশ চেতনা কমিটির ৭৯৮০৪০৭৫৪৪, ৭০০৩৭১৫৮২০, ৯৪৩৩৪৫০৯৬৩ নম্বরে। এছাড়াও সবুজ মঞ্চের ৯৮৩১৩১৮২৬, ৯৪৩২২০৯৭৭০ নম্বরও চালু থাকবে ২৪ ঘণ্টা। কালীপুজো, দীপাবলি এবং ভাসানের দিন মধ্যরাত অবধি সজাগ থাকবে এই কন্ট্রোলরুম। সাধারণ মানুষ শব্দবাজি, আতসবাজি বা ডিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারবেন এই নম্বরে”, বললেন জয়িতা কুণ্ডু।

আরও পড়ুন
বাঙালির প্রযুক্তিতে বাজিমাত, কলকাতায় অঞ্চলভেদে দূষণের মাত্রা জানাবে নয়া যন্ত্র

সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সংস্থার তরফ থেকে পৌঁছে দেওয়া হবে নিয়মলঙ্ঘনের তথ্য। ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। এবং তাছাড়াও সংস্থারকর্মীরা নিজেরাও চালাবেন নাগরিক নজরদারি। তবে অভিযোগকারীদের সমস্ত তথ্যই গোপন রাখা হবে বলে আশ্বাস দেন মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির সম্পাদিকা জয়িতা কুণ্ডু।

করোনা পরিস্থিতির কঠিন আবহেও বারবার মানুষের অসতর্কতা চোখে পড়ছে নিত্যদিন। ফুটে উঠছে দায়বদ্ধতার অভাব। এমনই অবস্থায় দাঁড়িয়ে পরিবেশকর্মীদের অভিনব এই উদ্যোগ ভরসা যোগাচ্ছে পরিবেশ-বান্ধব উৎসব পালনের। লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রকৃতিকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য...

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কালীপুজোর মরশুমে বাজি কেনাবেচা নিষিদ্ধ, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

Latest News See More