সারা পৃথিবী যখন করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত, তখন যেন উৎসবের মেজাজ সমস্ত নিউজিল্যান্ড জুড়ে। সংবাদ মাধ্যমের সামনে যখন প্রধানমন্ত্রী জাকিন্ডা আর্ডেরন এসে দাঁড়ালেন, তখন তাঁর মুখটাও আনন্দের হাসিতে ভেসে যাচ্ছিল। কারণটা আর কিছুই না, নিউজিল্যান্ড থেকে বিদায় নিয়েছে করোনা ভাইরাস। ১৭ দিন আগে সেখানে শেষ সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। সেই মানুষটাও সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এখন আর সেদেশে একজনও সংক্রমিত রোগী নেই।
ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ নিউজিল্যান্ডে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। তারপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ ছড়াতে থাকে, অথচ অন্যান্য দেশের মতোই সেখানেও কোনো চিকিৎসা নেই। তাই ২৫ মার্চ শুরু হয় লকডাউন। যদিও অন্যান্য দেশের তুলনায় নিউজিল্যান্ডে সংক্রমণের সংখ্যা সবসময়ই অনেক কম। এখনও অবধি মাত্র ১৫০০ জনের শরীরে ধরা পড়েছে সংক্রমণ। তার মধ্যে মাত্র ২২ জন মারা গিয়েছেন। তবে সেইসব এখন দুঃস্বপ্নের মতো। অবশেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রক নিশ্চিতভাবে ঘোষণা করলো, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আর একজনও করোনা আক্রান্ত মানুষ নেই।
সোমবার সকাল সকাল সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই সুখবর নিয়ে হাজির প্রধানমন্ত্রী জাকিন্ডা। সেইসঙ্গে ঘোষণা করলেন লকডাউনের বিধিনিষেধ মেনে আর চলতে হবে না। এবার থেকে প্রত্যেকেই স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বারগুলি বন্ধ রাখা হবে। যাতে বাইরে থেকে আবার নতুন করে ভাইরাসের সংক্রমণ না ঘটে। সরকারের এই ঘোষণার পর পরিস্থিতি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ওটাগো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মাইকেল বেকার। এই ঘটনা যে নিউজিল্যান্ডের সমস্ত চিকিৎসক এবং সাধারণ মানুষের এক বিরাট সাফল্য, সেকথাই মনে করছেন তিনি। সেইসঙ্গে এও জানিয়েছেন, মহামারীর প্রকোপে দেশের স্বাভাবিক জনজীবন বিপন্ন। এখন আবার কিভাবে সুস্থ জীবনে ফেরা যায়, সেটাই ভাবতে হবে সকলকে।
Powered by Froala Editor