এক এক করে স্বাভাবিক হচ্ছে দেশগুলি। জার্মানিতে কিছুদিন আগেই উঠে গেছে লকডাউন। কিন্তু ভাইরাসের ভয়ে মানুষ এখনো ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না। তবে মহামারী কাটিয়ে ওঠার পর, নিউজিল্যান্ডের ছবি একেবারে অন্যরকম। ইতিমধ্যেই করোনামুক্ত দেশ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে নিউজিল্যান্ড। এবার মুক্তির স্বাদ নেওয়ার পালা।
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাকিন্ডা অ্যার্ডার্নের সিদ্ধান্তে কাজে ফিরলেন ৪ লক্ষ মানুষ। তবে লকডাউনের নিয়ম সহজ করার পরই ভিড়ের বন্যায় ভেসে গেল দেশে ফার্স্ট ফুড সেন্টারগুলি। ম্যাকডোনাল্ডের সামনে দেখা গেল লম্বা লাইন। অনেকে ভোর ৪টে থেকেই লাইন দিয়েছিলেন দোকানে। লকডাউনে সেখানকার মানুষ যে অধীর অপেক্ষায় ছিল এই ফাস্ট ফুডের, ছবিতেই বোঝা গেল পরিষ্কার।
তবে শুধু ফাস্ট ফুড সেন্টার না, ভিড়ে জমল সমুদ্রতীরেও। অনেকে টার্ফ বোর্ড নিয়ে নেমেও পড়লেন সমুদ্রের জলে। বহুদিন পরে তাঁদের মিলেছে সার্ফিংয়ের সুযোগ। গলফ খেলতেও দেখা গেল বেশ কিছু মানুষকে। পাঁচ লক্ষের দেশ এখন কিছুটা হলেও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরল। কঠিন লকডাউন উঠে যাওয়ার স্বাদ পেল পুরনো জীবনের।
তবে প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেছেন একাধিকবার। সংক্রমণের হার ০.৪ শতাংশে নেমে এলেও, সাবধান থাকতে হবে সকলকে। বার্তা দিয়েছেন তিনি। কার্যত মহামারীর ছায়া নিউজিল্যান্ড থেকে সরে গেলেও, তিনি করিয়ে দিয়েছেন ১৯ জনের মৃত্যুর কথা।
তবে লকডাউন যে পুরোপুরি উঠেছে এমনটা নয়। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী এদিন জানান, জাতীয় বিপর্যয়ের মাত্রা ৪ থেকে ৩-এ নেমে এসেছে। আগামী সপ্তাহগুলিতে ধীরে ধীরে কমবে এই মাত্রা। তিনি জানান, এই যুদ্ধের আকস্মিক শেষ নেই কোনো। প্রথম ধাপ পেরিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে রয়েছে নিউজিল্যান্ড, এমনটাই মনে করছেন অ্যার্ডার্ন।
নিউজিল্যান্দে এখনও বন্ধ রয়েছে শপিং মল, পাব, সেলুনগুলি। আঞ্চলিক পর্যটনও বন্ধ এখন। বিপর্যয়ের মাত্রা ২-এ নেমে এলে তখন খুলে যাবে সেগুলিও। তার জন্য তিনি আরো দু’ সপ্তাহ অপেক্ষার আর্জি জানান দেশবাসীকে। সম্ভাব্য ১১-ই মে থেকে কার্যকরী হবে এই দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউন। তবে অবস্থার অবনতি হলে ফিরে যাওয়া হবে কঠিন নিয়মেই।
করোনা ভাইরাস যাতে দ্বিতীয়বার আঘাত হানে দেশে, তার ব্যাপারে সচেতন সমস্ত আধিকারিকরা। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও। তাই যতক্ষণ না সংক্রমণের হার পুরোপুরি শূন্য হচ্ছে, লকডাউন ওঠাতে রাজি নন অ্যার্ডার্ন।
শুধু নিউজিল্যান্ড নয়, সমস্ত দেশের মানুষরাই অপেক্ষা করে আছে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার। অনেকেই পরিকল্পনা করছেন, লকডাউন ওঠার পরেই কে কী করবে। সেটাই তো স্বাভাবিক। এতোদিন গৃহবন্দি থেকে সকলেই প্রায় দমবন্ধ। এই বাধানিষেধ উঠলেই যে ভিড়ের বন্যায় ভাসবে সারা পৃথিবী, বলার অপেক্ষা থাকে না। এখন নিউজিল্যান্ড, জার্মানির মতো করোনামুক্ত দেশগুলিই যেন আশ্বাসবাণী দিচ্ছে বাকিদের। ‘উই শ্যাল ওভারকাম সামডে’।