দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হলে, বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু একপ্রকার অবধারিত। কিন্তু সাপ কামড়ালে কোথায় পাওয়া যাবে তার অ্যান্টিভেনম, নিকটবর্তী হাসপাতালের দূরত্বই বা কতটা— এসব তথ্য এবার পাওয়া যাবে এক ক্লিকেই। সর্পদংশনে মৃত্যুর হার ঠেকাতে এবার নয়া অ্যাপ চালু করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। সাপ দংশনের চিকিৎসাজনিত সমস্ত তথ্যই প্রদান করবে এই ‘রিয়েলটাইম’ অ্যাপ্লিকেশন।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে বর্তমানে তৈরি হতে চলেছে এই অ্যাপ্লিকেশনটি। কিছুদিন পরেই তা এসে যাবে গুগল প্লে-স্টোরে। অ্যাপ্লিকেশনটির মধ্যে জিপিএসের সুবিধা থাকায় সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হাসপাতাল সংক্রান্ত সমস্ত নথিই দেখা যাবে সেখানে। জানা যাবে সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিভেনম মজুত রয়েছে কিনা।
প্রতিবছর ভারতে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় কয়েক হাজার মানুষের। আর সেই তালিকায় সব থেকে এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ২০১৭ সালের জাতীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী ওই বছর পশ্চিমবঙ্গে সাপের কামড় খেয়েছেন প্রায় ২৯ হাজার জন। যার মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৫ জন মানুষ। তবে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু হলে অনেকটাই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব মৃত্যুর ঘটনা। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই রোগীর মৃত্যু ঘটে অনেকক্ষেত্রে। নতুন এই অ্যাপ গুগল প্লে-স্টোরে চলে এলে সেক্ষেত্রে অনেকটাই সমাধান মিলবে এই সমস্যার।
তবে সকলেই যে সর্প দংশনের পর হাসপাতালে যান এমনটাও নয়। পরিসংখ্যান বলছে, সাপের কামড়ের বাস্তব সংখ্যাটা পরিসংখ্যানের থেকেও বহুগুণ বেশি। কিন্তু সরকারের কাছে দ্বারস্থ না হওয়ায় প্রকাশ্যে আসে না সেই তথ্য। মানুষকে সে ব্যাপারে সচেতন করতেই ‘অবিলম্বে’ নামে আরও একটি অ্যাপ্লিকেশন এনেছিল রাজ্য সরকার। সাপে কাটলে প্রাথমিকভাবে কী করণীয়, তার বিস্তারিত নিয়মাবলি উল্লেখিত ছিল সেখানে। সেই অ্যাপ্লিকেশনের সাফল্যের পরই এই নতুন উদ্যোগ রাজ্যের। তবে সর্পদংশনের অধিকাংশ ঘটনাই ঘটে প্রান্তিক অঞ্চলে। সেখানে এই অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার কতটা কার্যকরী হয়ে উঠবে, তা নিয়ে এখনও সন্দেহে রয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞান সংগঠনের সদস্য ও চিকিৎসকরা…
আরও পড়ুন
সাপের খাদক মাকড়সা! তাজ্জব বিজ্ঞানীরাও
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘সাপ আমাদের শত্রু নয়’, মানুষের হাত থেকে সাপেদের বাঁচাতে লড়াই যুবকের