গন্ধ এবং স্পর্শ অনুভূতিও পাওয়া যাবে মেটাভার্সে, আসতে চলেছে আশ্চর্য প্রযুক্তি

আজ থেকে দু’দশক আগেই মোবাইল বলতে অধিকাংশ মানুষ যেটা বুঝতেন, তা হল কিপ্যাড ফোন। তখনও টাচ স্ক্রিন, স্মার্টফোনের বালাই ছিল না কোনো। ভাবা যেত না, মোবাইল স্ক্রিনেই সামনে থেকে সরাসরি দেখতে পাওয়া যায় পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে বসে থাকে অপর একজনের কার্যকলাপ। বিগত দু’দশকে প্রযুক্তির অগ্রগতি তৈরি করেছে এক অনন্য নজির। শুধু টেলি-কমিউনিকেশন, ইন্টারনেট কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার বিবর্তনই নয়, প্রযুক্তির দৌলতে তৈরি হয়েছে সমান্তরাল ডিজিটাল জগৎও। এবার সেখানে হাজির হলে পাওয়া যাবে স্পর্শ (Touch) ও গন্ধের (Smell) অনুভূতি। 

মেটাভার্স (Metaverse)। করোনা মহামারীর সময় থেকেই বিশ্বজুড়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল মেটাভার্স এবং ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি। ফোনের দ্বিতল স্ক্রিন নয়, বরং তৃমাত্রিক এক ডিজিটাল জগতে হেঁটে বেড়ানোর সুযোগ দেয় এই বিশেষ প্রযুক্তি। সুযোগ দেয় ঘরে বসেই বিশ্বভ্রমণের। ম্যাট্রিক্স সিনেমার মতো যেন এই জগতেও নিজেদের আলাদা সত্তা খুঁজে পাবেন ব্যবহারকারীরা। 

গতবছরই নিজস্ব মেটাভার্স তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল ফেসবুক-এর মূল সংস্থা ‘মেটা’। তবে এখনও পর্যন্ত সেই পরিষেবা চালু না হলেও, পিছিয়ে নেই বাকিরা। একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে তাদের স্বতন্ত্র মেটাভার্স। চলছে ‘ডিজিটাল জমি’, ‘ডিজিটাল সত্তা’-র কেনাবেচা। এমনকি বহু মানুষ ‘বাসিন্দা’-ও হয়েছে এই ভার্চুয়াল জগতের। 

দৃষ্টি এবং শ্রবণ— এতদিন পর্যন্ত ভার্চুয়াল জগতে মূলত এই দুটি অনুভূতিই পেতেন মেটাভার্স ব্যবহারকারীরা। এবার এই তালিকায় জুড়ল স্পর্শ এবং গন্ধও। নেপথ্যে আমেরিকান টেক-সংস্থা ‘ওভিআর টেকনোলজি’। সম্প্রতি এক বিশেষ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি হেটসেট ও হ্যান্ডপিস প্রকাশ্যে এনেছে এই সংস্থাটি। হাইএন্ড এই হেডসেটের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ৪টি সুগন্ধির কার্টিজ। অবশ্য শুধু সুগন্ধি, এই চার ধরনের রাসায়নিক গন্ধের মিশ্রণে তৈরি হবে বিভিন্ন ধরনের গন্ধ। ভার্চুয়াল পরিবেশের ওপর নির্ভর করেই বদলাতে থাকবে সেই গন্ধের ধরন। স্বল্পমাত্রায় সেই গন্ধ ক্রমাগত নির্গত হতে থাকবে হেডসেট থেকে। অন্যদিকে তাইওয়ানের টেক-জায়েন্ট ‘এইচটিসি’ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি হেডসেট ও হ্যান্ডসেটে কম্পনকে ব্যবহার করে ব্যবস্থা করেছে স্পর্শ অনুভূতি তৈরির। 

কিছুদিন আগেই আয়োজিত হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল কনসিউমার ইলেকট্রনিক শো। লাস ভেগাসে আয়োজিত এই প্রযুক্তির আসরে অংশ নিয়েছিল বিশ্বের ২৬০টি দেশের বিভিন্ন প্রযুক্তি, টেলিকমিউনিকেশন এবং ইলেকট্রনিক্স সংস্থা। সেখানেই প্রকাশ্যে আসে এই দুই আশ্চর্য উদ্ভাবনী। বলার অপেক্ষা থাকে না, আর কিছুদিনের মধ্যেই এই প্রযুক্তি আসতে চলেছে বাজারে। তারপর বাস্তবের দুনিয়াও যেন হয়ে উঠবে কল্পবিজ্ঞানের কাহিনি… 

Powered by Froala Editor