মানুষের সর্বোচ্চ আয়ু ১৩০ বছরকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। আজ্ঞে হ্যাঁ, গুজব নয়। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন এমনটাই। জীববিদ্যা চর্চার শুরু থেকেই বিজ্ঞানীদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, মানুষের আয়ু (Human Lifespan) কত বছর হতে পারে। অন্য নানা প্রাণী সম্বন্ধে বিজ্ঞানীরা একমত হলেও মানুষের আয়ু নিয়ে দ্বন্দ্ব কাটেনি কোনোদিন। মোটামুটি গড় আয়ু বের করা সহজ। কিন্তু সর্বোচ্চ আয়ুর হিসাব মেলে না কিছুতেই। শেষ পর্যন্ত পরিসংখ্যান তত্ত্বের সাহায্যেই উত্তর খুঁজলেন বিজ্ঞানীরা। আর তাতে দেখা গিয়েছে, ১৩০ বছর পর্যন্ত অনায়াসে বাঁচতে পারেন মানুষ। এমনকি এই তথ্যমালাকেই আরেকটু বাড়িয়ে নিলে, ১৫০ বছরের সীমানা ছোঁয়াও অসম্ভব নয়।
সম্প্রতি ‘রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্র। এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন সুইৎজারল্যান্ডের ফেডারাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির পরিসংখ্যা বিভাগের গবেষক অধ্যাপক অ্যান্টনি ডেভিসন। এক্ষেত্রে গবেষণার জন্য তিনি দুটি পৃথক তথ্যতালিকা তৈরি করেছেন। একদিকে রেখেছেন ১১০ বছর পেরিয়ে আসা মানুষদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য। অন্যদিকে ১০৫ বছর পেরিয়ে আসা মানুষদের তথ্য। এইভাবে ১৩টি দেশ থেকে ১১০০ জন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করার পর সেই তথ্যতালিকার তুলনা করতে বসেছেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেও কাজে লাগিয়েছেন। আর এর ফলেই দেখা গিয়েছে, ১০০ বছর থেকে ১৩০ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের বেঁচে থাকা বা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা সমান সমান। ঠিক যেমন কয়েন টসের ক্ষেত্রে হেড বা টেল পড়ার সম্ভাবনা সমান সমান। তাই ১০০ বছরের উপর যেমন অনেকেই বাঁচেন, তেমনই ১৩০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচাও অসম্ভব নয়।
১৩০ বছরের সীমানাই অবাক করে। সেখানে ডেভিসন আরও এক পা এগিয়ে গিয়ে জানিয়েছেন, ১৫০ বছরের আগে কিছুতেই মানুষের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা শূন্য হতে পারে না। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে যাই উত্তর পাওয়া যাক, বাস্তবে এমনটা কল্পনা করা সত্যিই কঠিন। বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে অথবা সাধক গোষ্ঠীর মধ্যে অবশ্য এমন কথা শোনা যায়। কিন্তু তাঁদের জন্মের সময়ের কোনো সঠিক হিসাব নেই। সভ্য মানুষের জানা পরিসরে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচার রেকর্ড তৈরি করেছিলেন ফরাসি মহিলা জেনি কালমেন্ট। ১৯৯৭ সালে তাঁর মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ১২২ বছর। আর বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বরিষ্ঠ মানুষ জাপানের কানে তানাকা। তাঁর বয়স ১১৮ বছর। ফলে ডেভিসনের এই গবেষণাকে এখনই স্বীকৃতি দিতে নারাজ অনেকেই।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ১১টি শহর, যেখানে আজও মানুষ বাস করে