মাত্র কয়েকদিন আগের কথা। উত্তরাখণ্ডে আবারও ফিরে এল তুষারধসের ভয়ংকর স্মৃতি। বাঁধ ভেঙে পড়া, যোশীমঠ ভেসে যাওয়ার দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি কেউ। মনে পড়ে যায় বছর আটেক আগের কেদারনাথের দুঃস্বপ্ন। তাহলে কি হিমালয়ের হিমবাহ ক্রমশ বিপদের মুখে পড়ছে? সেই কথাই কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
ওয়ার্ল্ড গ্লেসিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের একটি রিপোর্ট সেই প্রবল আশঙ্কার কথাই প্রকাশ করেছে। এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটির কাজই হল, পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে থাকা হিমবাহগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা। আর সেই কাজটি করতে গিয়েই হিমালয়ের দুর্দশা নজরে এসেছে তাঁদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত কয়েক বছরে ভারত ও নেপালে অবস্থিত বিভিন্ন হিমবাহের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। দ্রুত হারে গলতেও শুরু করেছে তারা। ফলে নিজেদের ‘সুস্বাস্থ্য’ বজায় রাখাটাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তারই ফলে হিমবাহ ভেঙে যাচ্ছে দ্রুত।
বিজ্ঞানীরা সেই একই সতর্কবাণীই বারবার দিচ্ছেন। হিমালয়-সংলগ্ন হিমবাহগুলির যে এমন দুর্দশা, তার জন্য দায়ী আমরাই। প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষণ বেড়ে যাচ্ছে; বাড়ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। জলবায়ুর খামখেয়ালি আচরণও লক্ষ করছি আমরা। আর তারই ফল পড়ছে বিশ্বের তাবড় হিমবাহগুলির ওপর। শুধু জলস্তর বেড়ে যাওয়াই নয়; হিমবাহ ভেঙে পড়লে ঠিক কী হতে পারে, তা চোখে আঙুল দিয়ে বারবার দেখিয়ে দিচ্ছে উত্তরাখণ্ড। অদ্ভুত ব্যাপার হল, শীতকালে হিমবাহ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা বিরল। জল জমে যেখানে বরফ তৈরি হওয়ার কথা; সেখানে বরফ গলে গলে ভেঙে পড়ছে। আর কেড়ে নিচ্ছে বহু প্রাণ, সমস্ত বাঁধ-গ্রাম-জঙ্গল ভাসিয়ে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বিপদ যে এখনও কাটেনি, সেই কথাই আরও একবার মনে করিয়ে দিল এই আন্তর্জাতিক রিপোর্ট।
Powered by Froala Editor