ভূমিকম্প - শব্দটা শুনলেই মনে পড়ে এক ভয়ঙ্কর ছবি। ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র সমস্তকিছু কাঁপতে কাঁপতে ভেঙে পড়ছে। এই ভূমিকম্প কতটা বিধ্বংসী তা জানতে প্রথমেই খোঁজ নিতে হয় কতটা প্রবল ছিল তার তরঙ্গ। আর এই কম্পনের মাত্রা মাপতে বিগত ৮৫ বছর ধরে ভরসা রিখটার স্কেল। তবে চার্লস রিখটারের তৈরি সেই স্কেলের জায়গা নিতে চলেছে নতুন পরিমাপক। সেই পরিমাপকের স্রষ্টা এক বাঙালি বিজ্ঞানী! আসামের ঢেকিয়াজুলির বাসিন্দা রঞ্জিত দাসের নামেই সেই পরিমাপকের নাম রাখা হয়েছে ‘দাস ম্যাগনিচ্যুড স্কেল’।
বর্তমানে চিলির ন্যাশানাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে গবেষণা করেন রঞ্জিত দাস। সেখানে বসেই তৈরি করে ফেলেছেন নতুন এই পরিমাপক। ইতিমধ্যে সেই পরিমাপক রিখটার স্কেলের থেকে অনেক বেশি নিখুঁত বলে প্রমাণিত হয়েছে। লগারিদমিক স্কেল হওয়ায় স্বল্প মাত্রার কম্পনেও নিখুঁত হিসেব দিতে পারে রিখটার স্কেল। কিন্তু সেই মাত্রা ৪ রিখটারের বেশি হলেই হিসেবে গণ্ডগোল দেখা দেয়। আর কম্পন যত তীব্র হয়, ভুলের সম্ভাবনা থাকে তত বেশি। অবশ্য এর আগেই জাপানে এক ধরণের ম্যাগনিচ্যুড স্কেল তৈরির চেষ্টা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেই পরিমাপক সফল হয়নি।
ইতিমধ্যে ১৯৭৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ২৫ হাজারের বেশি ভূমিকম্পের তথ্য নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ‘দাস ম্যাগিচ্যুড স্কেল’ অনেক বেশি নিখুঁত। ২০০৪ সালে সুমাত্রায় যে ভূমিকম্প হয়েছিল, রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৯ একক। ‘দাস ম্যাগনিচ্যুড স্কেল’-এ দেখা গিয়েছে তার সঠিক মাত্রা হবে ৯.১ একক। এরকম তীব্র ভূমিকম্পে লগারিদমিক স্কেলে ০.১ এককও অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এবার ৮৫ বছরের পুরনো রিখটার স্কেলের দিন যে শেষ হল, সে-কথা বলাই বাহুল্য। আর নতুন এই স্কেলের আবিষ্কার বিজ্ঞানের জগতে বাঙালির সম্মান আরও অনেকটাই বাড়িয়ে দিল।
Powered by Froala Editor