ভারসাম্য হারাচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র, আশঙ্কায় বিজ্ঞানীরা

ক্রমশ ভারসাম্য হারাচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র। পূর্বদিকের ঘনত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, উল্টোদিকে পশ্চিম অংশের ঘনত্ব সেই তুলনায় প্রায় স্থির রয়েছে। সম্প্রতি ভূ-তাত্ত্বিকদের গবেষণায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। আপাতত এর ফলে বড়ো ধরণের কোনো বিপদের আশঙ্কা না থাকলেও মহাশূন্যে সমস্ত গ্রহই নির্দিষ্ট ভারসাম্যের কারণেই টিকে থাকে। তাই আগামীদিনে এই পরিবর্তনের কীরকম প্রভাব পড়তে পারে, তাই নিয়ে বেশ চিন্তিত বিজ্ঞানীরা।

সম্প্রতি নেচার জিওসায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন পৃথিবীর কেন্দ্রের তরল অংশ ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে কঠিন শিলায় পরিণত হচ্ছে। এই অংশ মূলত লোহা এবং নিকেল দিয়ে গঠিত। প্রবল তাপে গলিত অবস্থায় থাকা এই তরল অংশও ক্রমশ কঠিন হয়ে আসছে। গত ১০০ বছরের বিভিন্ন ভূমিকম্প থেকে পাওয়া সিসমিক তরঙ্গের তথ্য সে-কথা প্রমাণ করেছে। কিন্তু তার থেকেও চিন্তার বিষয়, এই ঘনীভবন সর্বত্র একই গতিতে ঘটছে না। পূর্ব গোলার্ধে, অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়ার নিচে যত দ্রুত ঘনীভবন ঘটছে, আমেরিকার নিচে তার গতি অনেকটাই কম।

ভূ-তাত্ত্বিকরা এখনও এই বৈষম্যের কোনো কারণ খুঁজে বের করতে পারেননি। মনে করা হচ্ছে কেন্দ্রের উপরিস্তরে, অর্থাৎ ম্যান্টল অংশে এমন কোনো গঠনগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার জন্য পূর্ব গোলার্ধে উষ্ণতা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। আবার এর পিছনে পৃথিবীর চৌম্বক রেখার প্রভাব থাকতে পারে বলেও অনুমান করছেন অনেকে। কেন্দ্রের তরল লোহার ঘূর্ণন গতির জন্যই পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি হয়। এই অংশ কঠিন লোহার ও নিকেলের সঙ্করে পরিণত হলে অস্তিত্ব হারাবে চৌম্বকক্ষেত্র। ইতিমধ্যে এইসমস্ত বিষয় গভীরে পর্যবেক্ষণের জন্য পদার্থবিদদের সাহায্যও চেয়েছেন ভূতাত্ত্বিকরা। তবে এখনই মানুষের জীবনযাত্রার উপর এই ঘটনার কোনো প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কী আছে পৃথিবীর পেটের ভিতর? গর্ত খুঁড়লেন বিজ্ঞানীরা, তারপর...

Latest News See More