জলের মধ্যে লোহার উপস্থিতি যে ক্ষতিকারক, তা আর নতুন কী? কিন্তু জল সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত লোহার পাইপও হতে পারে ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী। জং-ধরা লোহার পাইপের সঙ্গে জীবাণুনাশকের বিক্রিয়ায় তৈরি হয় ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা।
রোজমেরি বোর্নস কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপক হাইজোউ লিউয়ের প্রথমে নজরে আসে বিষয়টি। জল সরবরাহ এবং পরিশোধনের গবেষণায় নিযুক্ত এই গবেষক লক্ষ্য করেন ক্রোমিয়ামের সঙ্গে জীবাণুনাশকের বিক্রিয়া চলে অবিরত। পাঁচ থেকে সত্তর বছর অবধি ব্যবহৃত লোহার পাইপের মাধ্যমে পরীক্ষাও করেন তিনি। গবেষণায় যুক্ত ছিলেন ভারতীয় গবেষক সুমন্ত অবসরালাও।
ক্রোমিয়াম ধাতু মূলত ব্যবহৃত হয় লোহার পাইপে দৃঢ়তা প্রদানের জন্য। পাশাপাশি খনিজ হিসাবে পানীয় জলেও উপস্থিত থাকে এই মৌল। তবে সাধারণত এর যোজ্যতা থাকা ত্রিমাত্রিক। জং-ধরা লোহার ক্রোমিয়ামের সঙ্গে জীবাণুনাশকের বিক্রিয়ার ফলে যা রূপান্তরিত হয় ছয় মাত্রার যোজ্যতায়। পরিণত হয় ‘কার্সিনোজেনিক হেক্সাভ্যালেন্ট ক্রোমিয়াম’-এ। যা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি বিক্রিয়ায় শূন্য যোজ্যতার ক্রোমিয়ামের উপস্থিতিও চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। যা ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান না হলেও ভয়ঙ্কর বিষাক্ত।
এই গবেষণাই যেন নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে প্রযুক্তিমহলে। জল সরবরাহ তো বটেই, সেই সঙ্গে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টেও বহুলভাবে ব্যবহৃত হয় উচ্চ-ক্রোমিয়াম যুক্ত মিশ্র ধাতু। গবেষকদের দাবি, এর ফলে পরিশোধনের বদলে আরও বিষাক্ত হয়ে উঠছে পানীয় জল। কাজেই পানীয় জল সরবরাহের পুরো পরিকাঠামোই বদলের আর্জি জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন করে পরিকাঠামো এবং প্রযুক্তি তৈরির ক্ষেত্রেও চলছে বিকল্পের সন্ধান...
Powered by Froala Editor