মানবদেহেই এতদিন লুকিয়ে ছিল এই অঙ্গ! সন্ধান দিলেন বিজ্ঞানীরা

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগেও অনেক রোগই এখনও অধরা মানুষের কাছে। আর মানবদেহের গঠন? মানুষের শরীরের অভ্যন্তরে কোথায় কী যন্ত্র রয়েছে, তার নকসা বহু আগেই তৈরি করে ফেলেছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেই গঠনচিত্রে ফাঁক রয়ে গিয়েছিল এতদিন। সম্প্রতি প্রস্টেট ক্যানসারের গবেষণা করতে গিয়েই ধরা পড়ল তা। আবিষ্কৃত হল মানবদেহের নতুন অঙ্গ।

এতদিন অবধি চিকিৎসা বিজ্ঞানে জানা ছিল মানুষের শরীরে উপস্থিত রয়েছে তিনটি লালা গ্রন্থি। চোয়াল ও গলার নিচে একটি করে। এবং অপরটি চোয়ালের পিছনে। তবে নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানীরা দেখালেন অনুনাসিক গহ্বরের তলায় লুকিয়ে রয়েছে আরও এক জোড়া লালাগ্রন্থি। যা গলা এবং নাসিকা গহ্বরের সংযোগস্থলকে সিক্ত রাখতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা এই গ্রন্থির নামকরণ করেছেন ‘টিউবারিয়াল স্যালাইভারি গ্ল্যান্ড’। আয়তনে যা প্রায় দেড় ইঞ্চির মতো। 

তবে বিজ্ঞানীরা শুধু এই একটি গ্রন্থিই আবিষ্কার করেছেন, বললে ভুল হবে। তাঁরা দেখিয়েছেন মুখগহ্বরের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে আরও হাজার খানেক অণুগ্রন্থি। নতুন এই গ্রন্থিগুলির সন্ধান পেয়ে ওই বিজ্ঞানীরা নিজেরাও চমকে গিয়েছেন। সম্প্রতি এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে লাইভসায়েন্স নামক অনলাইন জার্নালে।

কিন্তু কীভাবে খুঁজে পেলেন তাঁরা এই রহস্যময় গ্রন্থির উপস্থিতি? প্রস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপির ব্যবহারের কারণে ক্ষতি হয়ে থাকে লালাগ্রন্থির। ফলে রোগীকে প্রায়শই ভুগতে হয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়। সেই কারণেই লালাগ্রন্থিগুলিকে বিশেষ সুরক্ষা দিয়েই রেডিও থেরাপির ব্যবহার করছিলেন ওই বিজ্ঞানীরা। তবে কিছু ক্ষেত্রে তারপরেও পাওয়া যাচ্ছিল না সুফল। শেষ অবধি সিটি স্ক্যান এবং পজিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি সমাধান করে সেই রহস্যের। পূর্ব-পরিচিত তিনটি লালা গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্থ না হলেও সেসব ক্ষেত্রে এই অজানা লালাগ্রন্থির ক্ষতিসাধনের কারণে যন্ত্রণার ভুক্তভোগী হচ্ছিলেন রোগীরা। 

এই গ্রন্থির আবিষ্কারের পর প্রস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। আগামীদিনে এই গ্রন্থিগুলির ব্যাপারেও সতর্ক থাকলে এড়ানো যাবে বাড়তি বিপত্তি...

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
থর মরুভূমির বুক চিরে বয়ে যেত নদী, প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা

Latest News See More