পৃথিবীর প্রতিবেশী মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলেছে দীর্ঘদিন। তবে জীবের অস্তিত্ব টিকে থাকার জন্য যে দুটি অত্যাবশ্যকীয় পদার্থের প্রয়োজন, সেই জল এবং মুক্ত অক্সিজেন দুটির কোনোটিই বর্তমান নেই মঙ্গলে। অবশ্য মঙ্গলে না থাকলেও, সৌরজগতের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এমন রত্নভাণ্ডার। সম্প্রতি এমনটাই জানালেন গবেষকরা। বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপাতে (Europa) তাঁরা সন্ধান পেলেন জল এবং উন্মুক্ত অক্সিজেনের। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই প্রাণের অস্তিত্বের ক্ষীণ সম্ভাবনার দেখা দিচ্ছে ইউরোপায়।
বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপা ‘ফ্রোজেন স্যাটেলাইট’ বা হিমায়িত উপগ্রহ বলেই পরিচিত। তার অন্যতম কারণ ইউরোপার বাইরের পৃষ্ঠ গঠিত বরফ দিয়ে। তবে এই বরফের চাদরের তলায় রয়েছে সুবিশাল সমুদ্র। যার আয়তন পৃথিবীর মহাসাগরের থেকেও বড়ো। এবং আশ্চর্যের বিষয় হল, তা লবণাক্ত এবং উষ্ণও বটে। হিমায়িত উপগ্রহের অভ্যন্তরে উষ্ণ মহাসাগরের অস্তিত্বের কথা শুনে অবাক লাগছে নিশ্চয়ই? তবে জ্যোতির্বিদদের একাংশ তুলে ধরছেন এমনই রহস্য। বৃহস্পতির প্রবল মহাকর্ষ বলের প্রভাবেই বিপুল শক্তি অর্জন করে ইউরোপা। আর এই শক্তির প্রভাবেই উষ্ণ থাকে তার অভ্যন্তরীণ ভাগ।
অন্যদিকে এই একইভাবে মুক্ত অক্সিজেনের অস্তিত্বও রয়েছে ইউরোপায়। ইউরোপের পৃষ্ঠে হিমায়িত অক্সিজেন রয়েছে, এ-কথা বহু আগেই জানিয়েছিলেন গবেষকরা। সূর্যালোক এবং বিভিন্ন মহাজাগতিক কণার প্রভাবেই ইউরোপার পৃষ্ঠে ক্রমাগত তৈরি হয় এই অক্সিজেন। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, সমুদ্রস্রোতের কারণে ইউরোপের বরফের চাদর ক্রমাগত ক্ষয়ীভূত হয় ভেতর থেকে। আর তার ফলে পরিচলন পদ্ধতিতে মুক্ত অক্সিজেন মিশতে থাকে অতলান্ত মহাসমুদ্রে। অর্থাৎ সহজ ভাষায় বলতে গেলে, স্বকীয় ভঙ্গিতে পৃষ্ঠের অক্সিজেনকে ক্রমশ সমুদ্রের জলে মিশিয়ে চলেছে ইউরোপে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃষ্ঠে উৎপাদিত অক্সিজেনের ৮৬ শতাংশই পৌঁছাচ্ছে ইউরোপার মহাসাগরে।
এই দুই উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারই যেন উস্কে দিচ্ছে ইউরোপায় প্রাণের সম্ভাবনা। যদিও ইউরোপা প্রাণের সমস্ত শর্ত পূরণ করলেও, এখনও পর্যন্ত প্রাণের অস্তিত্বের কথা নিশ্চিত করার সুযোগ হয়নি গবেষকদের। নাসার ‘ইউরোপা ক্লিপার’ মিশনে এই রহস্যের পাকাপাকি সমাধান মিলতে পারে বলেই, মনে করছেন গবেষকরা…
আরও পড়ুন
গাছ-গাছালির উপস্থিতি কমিয়ে আনে স্ট্রোকের সম্ভাবনা, জানাচ্ছে গবেষণা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল ডেকে আনছে বিপদ! জানাচ্ছে সাম্প্রতিক গবেষণা