২০২০ সাল। দিঘার (Digha) সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলারে ধরা পড়েছিল এক বিচিত্র মাছ। সেটি যে ঈল মাছ (Eel), তাতে কোনো সন্দেহ ছিল না মৎস্যজীবীদের। তবে তার দেহের গঠন বেশ অবাক করেছিল তাঁদের। সব মিলিয়ে দিঘার মৎস্য গবেষণাকেন্দ্রে প্রায় ৭টি নমুনা তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা। এর কিছু দিন পরে কেরলের কালামুক্কু জেলাতেও ধরা পড়েছিল অনুরূপ আরও ১২টি ঈল মাছ। বিগত দু’বছরের বিস্তারিত গবেষণায় এবার বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হলে, সংশ্লিষ্ট নমুনাগুলি একটি সম্পূর্ণ অজানা ঈল প্রজাতির।
সম্প্রতি জার্নাল অফ ফিস বায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র। সদ্য-আবিষ্কৃত ঈল প্রজাতিটির নামকরণ করা হয়েছে অ্যারিওসোমা ইন্ডিকাম। গবেষণায় জড়িত ছিলেন গোপালপুর অন সি সেন্টার, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ ন্যাশ্নাল ব্যুরো অফ ফিশ, জুওলজিকুয়াল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বে অ্যারিওসোমা গোত্রের সবমিলিয়ে প্রায় ২৩৩টি প্রজাতির দেখা মেলে। যার মধ্যে ৬টি প্রজাতির দেখা মিলত ভারতে। নতুন আবিষ্কারের পর সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াল ৭-এ। নতুন প্রজাতিটির গড় দৈর্ঘ্য আনুমানিক ৩৬২ মিলিমিটার। অর্থাৎ, এক ফুটের খানিক বেশি। সবুজ-বাদামী বর্ণের শরীরে কালো প্যাচ এবং অস্পষ্ট ব্যান্ডই এই প্রজাতিটিকে আলাদা করে দেয় অন্যদের থেকে। পাশাপাশি দ্বিবর্ণ পাখনা এই প্রজাতিটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
ভারতীয় জলসীমা থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে ঈল মাছ। ভারতের বিপন্নপ্রায় প্রাণীদের তালিকায় ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত হয়েছে ঈলের বেশ কিছু প্রজাতি। সেই কারণেই এই আবিষ্কারটিকে ২০২২ সালের অন্যতম আবিষ্কার বলে চিহ্নিত করছেন ভারতীয় গবেষকরা। তবে সদ্য-আবিষ্কৃত প্রাণীটিকে এখনও সেই তালিকায় অন্তর্গত করা হয়নি। এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে এই বিশেষ প্রজাতিটির চরিত্র, জীবনধারণের অভ্যাস এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারেও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি গবেষকরা। তবে ইতিমধ্যেই এই প্রজাতির ডিএনএ এবং জিন সংরক্ষিত হয়েছে লখনৌ-এ। যা আগামীদিনে গবেষণায় বিশেষভাবে সাহায্য করবে বিজ্ঞানীদের, এমনই জানাচ্ছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ-ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ফিশ জেনেটিক রিসোর্সেসের মুখপাত্র…
আরও পড়ুন
মানুষ ছাড়াও হাসতে অভ্যস্ত ৬৫টি প্রজাতির প্রাণী! জানাচ্ছে গবেষণা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শুধু মানুষই নয়, অন্য প্রজাতিকে বিলুপ্তিতে ঠেলে দেয় এই 'ভারতীয়'রাও!