ছোট্ট স্কিন-প্যাচই জানিয়ে দেবে আপনি নেশাগ্রস্ত কিনা, অভিনব প্রযুক্তি দক্ষিণ কোরিয়ার

কোনো ব্যক্তি মাদক সেবন করেছেন কিনা, তা শনাক্ত করতে বর্তমানে ব্যবহার করা হয় প্রথাগত পদ্ধতিই।  মুখে পাইপ লাগিয়ে, কিংবা চুল বা বর্জ্য পদার্থের মাধ্যমেই হয় এই শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া। তবে এবার বাজারে চলে এল নতুন পদ্ধতি। অনেকটা যেন ব্যান্ড-এইড। ত্বকের ওপরে সেই প্যাচ লাগিয়ে দিলেই তা জানান দেবে, কোনো ব্যক্তি মদ্যপান বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন কিনা। 

কোরিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেটেরিয়াল সায়েন্সের অধ্যাপক ডঃ হো সাং জাং যুক্ত ছিলেন এই গবেষণার সঙ্গে। এই শনাক্তকরণ পদ্ধতিতে মূলত ব্যবহার করা হবে শরীর থেকে নির্গত ঘামকেই। এমনটাই জানাচ্ছেন মূল গবেষক। আর রক্ত, চুল কিংবা মল-মূত্রের থেকে ড্রাগ শনাক্তকরণের মতো জটিল নয় পদ্ধতিটি। ফলে অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া। 

তবে শুনতে সহজ মনে হলেও, এই প্রযুক্তি নির্মাণ ততটাও সহজ ছিল না বিজ্ঞানীদের কাছে। কারণ ঘামের মাধ্যমে নির্গত ড্রাগ নমুনার মাত্রা থাকে অত্যন্ত কম। যা চিহ্নিত করা এক কথায় প্রায় অসম্ভবই। আর সেই ধাঁধাঁর সমাধান করতেই হো সাং জাং ব্যবহার করেছেন কিংবদন্তি ভারতীয় বিজ্ঞানী সি ভি রমনের গবেষণাকে। ব্যবহার করেছেন রমন স্ক্যাটারিং-এর প্রযুক্তি। বিশেষ করে ড্রাগের অণুগুলি থেকে বিশেষরকম আলোর বিচ্ছুরণ ণনাক্তকরণের প্রবণতাকে বাড়িয়ে দেয় প্রায় ১০১০ গুণ। 

এই প্যাচের মধ্যে গবেষকরা রেখেছেন একটি অপটিকাল সেন্সার, যা সিল্ক ফাইব্রিয়ন সেন্সার দিয়ে তৈরি। সেখান থেকে প্রথমে ত্বকে পাঠানো হবে উচ্চ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের লেসার আলো। তা বিচ্ছুরিত হয়ে প্যাচে ফিরে এলেই সংযুক্ত ইলেকট্রনিক গ্যাজেটে উঠবে বার্তা। সবথেকে আকর্ষণীয় বিষয়, চওড়ায় মাত্র ২৫০ ন্যানোমিটারের এই প্যাচ।

অন্যদিকে, এর খরচও প্রায় সাধ্যের মধ্যেই। প্রতিটি প্যাচ তৈরিতে আনুমানিক ১ ডলারেরও কম খরচ হবে বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। তবে বড়ো পরিমাণ উৎপাদনে আরও কমে যাবে এই খরচ। পুনর্ব্যবহার না হওয়ার জন্য থাকবে না সংক্রমণের আশঙ্কাও। দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে ইতিমধ্যেই চলে এসেছে এই প্রযুক্তি। এবার ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ার পালা সারা পৃথিবীতেই। এই মহামারীর আবহে সংক্রমণের আশঙ্কাতেই বন্ধ রাখা হয়েছে ড্রাগ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া। সদ্য আবিষ্কৃত এই প্যাচের ব্যবহারে আবার গতি পাবে পুলিশি কার্যকলাপ…

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
গাছেদের শরীরেও আছে চৌম্বকক্ষেত্র, সন্ধান দিলেন জার্মানির বিজ্ঞানীরা