বাদুড়ের শরীরে করোনার নতুন প্রজাতি, আবার আঁতুড়ঘর চিন

সার্স-কোভ-২ একমাত্র নয়, খুব তাড়াতাড়ি আরও ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাসের মুখোমুখি হতে পারে মানুষ। সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনটাই দাবি করছেন চিনের একদল বিজ্ঞানী। কোনো মিউট্যান্ট জিন নয়, একেবারে নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বাদুড়ের শরীরে। বলা বাহুল্য, এই ভাইরাস মোকাবিলায় প্রচলিত কোনো প্রতিষেধক বা বিগত দেড় বছরের অভিজ্ঞতা থেকে জানা কোনো চিকিৎসা পদ্ধতিই কাজ করবে না। কারণ এই রোগের প্রকৃতি হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

শ্যানডং ইউনিভার্সিটির গবেষক ইউফেন সাই এবং তাঁর সহকর্মীরা বিগত বেশ কিছুদিন ধরে ইউনান প্রদেশের বাদুড়ের শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, বাদুড়ের শরীর থেকে মানুষের শরীরে আর কত ধরণের ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে, তার একটি তালিকা তৈরি করা। ইতিপূর্বে হেন্ড্রা, মারবার্গ, ইবোলার মতো ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে বাদুড়ের শরীর থেকেই। আর এখনও বিতর্কের নিরসন না হলেও মোটামুটি সকলেই একমত যে করোনা ভাইরাসের উৎসও বাদুড়ের শরীর। এক্ষেত্রে আরও বেশি আতঙ্কের বিষয়, করোনা ভাইরাস শুধু মানুষকেই আক্রমণ করে না। সেইসঙ্গে কুকুর, বিড়াল, গবাদি পশু এমনকি বাঘ-সিংহের মতো অরণ্যবাসী প্রাণীকেও আক্রমণ করেছে। তবে এখানে করোনা ভাইরাস বলতে সার্স-কোভ এবং সার্স-কোভ-২ এর কথাই বলা হচ্ছে। এছাড়াও আরও বেশ কয়েক প্রজাতির করোনা ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন অধ্যাপক সাই ও তাঁর সহকর্মীরা।

২০১৯ সালের মে মাস থেকে ২০২০ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করেছেন এই গবেষক দলটি। তারপর সেইসমস্ত নমুনা থেকে করোনা ভাইরাসের বৈচিত্র ও অভিযোজনের একটি রেখাচিত্র তৈরি করেছেন। অধ্যাপক সাইয়ের মতে, অন্তত আরও দুটি প্রজাতির ক্ষেত্রে সার্স-কোভ এবং সার্স-কোভ-২ প্রজাতির সঙ্গে যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। আর মানুষের শরীরে টিকে থাকাও যে তাদের পক্ষে কঠিন নয়, সেটাও পরীক্ষা করে প্রমাণ করা গিয়েছে। ইতিমধ্যে ‘সেল’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র। চিকিৎসকরা শুধু সার্স-কোভ-২-এর আক্রমণ সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। একবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না আনতেই এসে পড়ছে আরও একটি তরঙ্গ। তবে শেষ পর্যন্ত প্রতিষেধকের আবিষ্কারে আশার আলো দেখেছিলেন অনেকেই। করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতির সন্ধান তাই নতুন করে দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করতে চলেছে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় না মস্তিষ্ক, প্রমাণ দিলেন গবেষকরা