চারদিক ঘিরে চা বাগান। আর তার মধ্যেই গভীর অরণ্য। প্রতি বছর কয়েকশো পাখি ভিড় করে আসে এখানে। জঙ্গলের মাঝের জলাশয়ের টানে ছুটে আসে পরিযায়ী পাখির দলও। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর পৌরসভার সাপনিকলা অরণ্যের এই প্রাকৃতিক আকর্ষণের টানে কিছু পর্যটকও ছুটে যান প্রত্যেক বছর। কিন্তু পর্যটনের জন্য নেই উপযুক্ত পরিকাঠামো। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি মর্যাদা দেখিয়ে অবশেষে সেই পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চলেছে স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসের অনুকরণে পাখিদের জন্য অভয়ারণ্য গড়ে তোলারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিগত কয়েক দশক ধরেই সাপনিকলা অরণ্যের উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের দাবি জানিয়ে আসছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু বাস্তবে প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। কয়েক বছর আগে অরণ্যের প্রবেশপথে তৈরি হয়েছিল উঁচু গেট। বিশ্রামাগারও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আজ সবটাই এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থার পর অবশেষে উদ্যোগী প্রশাসন। ইসলামপুরের পৌর প্রশাসক কানাইলাল আগরওয়াল জানিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মধ্যে আনা হবে সাপনিকলা অরণ্যকে। আগাছা পরিষ্কার এবং পাখিদের জন্য উপযুক্ত বাসস্থান গড়ে তোলার কাজে লাগানো হবে এলাকার মানুষদেরই। এর ফলে যেমন কিছুটা কর্মসংস্থান হবে, তেমনই এই অরণ্যকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে পারলে স্থানীয় মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উত্তরবঙ্গে প্রতি বছর ভিড় জমান অসংখ্য পর্যটক। এর মধ্যে কুলিক পক্ষীনিবাস পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি জায়গা। সাপনিকলা অরণ্যতেও যদি পক্ষীনিবাস গড়ে ওঠে, তাহলে সেখানেও পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকবে। এমনিতেই অরণ্যে পাখির সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। পরিযায়ী পাখিদেরও দেখা মেলে প্রতি বছর। শুধু তাদের নিরাপত্তার দিকটা আজও মজবুত নয়। চোরাশিকারীদের উৎপাতও রয়েছে। অনেকে বাড়ির জ্বালানির জন্যও গাছ কেটে নিয়ে যান নির্বিচারে। এতদিন এসবের বিরুদ্ধে বারবার আবেদন জানিয়ে এসেছেন সচেতন নাগরিকরা। অবশেষে প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নেওয়ায় খুশি সকলেই।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ইয়াসে বাস্তুহারা পাখির দল, গোসাবার পাখিরালয়ের বুকে শূন্যতা