করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বিগত কয়েকদিন ধরেই ভারত-চিন সম্পর্কের মধ্যে তৈরি হয়েছে শীতলতা। বিস্তর কূটনৈতিক আলোচনা, সীমান্তে সেনা সমাবেশের পর নেপালেও চিনা আধিপত্য বাড়ছে। এরই মধ্যে নতুন প্রস্তাব নিয়ে নেপালের কাছে হাজির হয়েছে চিনের প্রশাসন। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী, নেপালের স্কুলগুলোয় শিক্ষকদের মাইনে দিতে পারে চিন সরকার; যদি সেখানে চাইনিজ ম্যান্ডেরিন ভাষা পড়ানো হয়।
চিনের এ হেন প্রস্তাব ঘিরে স্বভাবতই উঠেছে বিতর্ক। অবশ্য এই ঘোষণার পরে নেপালেও স্কুলগুলিতে ম্যান্ডেরিন শেখা বাধ্যতামূলক করে দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। সেখানকার বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলে ইতিমধ্যেই ম্যান্ডেরিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য একটাই, এটা হলে চিন সরকার শিক্ষকদের মাইনে দেবে। আর এই প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। নেপালের ভেতরেও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, নেপালের আইন অনুযায়ী এভাবে কোনো বিদেশী ভাষাকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করতে পারে না কোনো স্কুলই। এই সিদ্ধান্ত একমাত্র সেখানকার শিক্ষা দফতর নিতে পারে।
বিগত বেশ কিছু বছর ধরে নেপালের অন্দরে চিনের প্রভাব যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময় তা নিয়ে বারবার অসন্তোষ জানিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যে চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের যে উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছিল, সেটা বয়কট করেছে ভারত। যার জেরে আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার মুখে। তারই মধ্যে নেপালে চিনের প্রভাব বিস্তার যথেষ্ট চিন্তায় রাখল ভারতকে। দিন কয়েক আগেই নেপাল আর ভারতের মধ্যের ম্যাপ-বিতর্কও মনে করা যেতে পারে। যেখানে নেপালের পার্লামেন্টের লোয়ার হাউসে নেপালের যে ম্যাপ দেখানো হয়েছে, তাতে ভারতের বেশ কিছু জায়গাও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি দিল্লি। সেখান থেকেই বিতর্ক আরও জোরালো হয়েছে। এর পাশাপাশি এমন সব সিদ্ধান্ত বিপদে রাখল নেপালকেও; তাঁরা কি নিজেদের সংস্কৃতি হারানোর মুখে? এমন প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এই দেশটিও…
Powered by Froala Editor