উত্তর মহাসাগরের বুকে গোপন অভিযানের জন্য প্রস্তুত রাশিয়ার নতুন রণতরী

রাশিয়ার অপরাজেয় নৌবাহিনীর কথা তো সকলেই জানেন। কত না রহস্য এই বাহিনীকে ঘিরে। অনেক জাহাজের প্রযুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্যই জানা যায় না। আর সেই তালিকাতেই যুক্ত হল আরও একটি নতুন নাম, 'আকাদেমিক আলেকজান্দ্রভ'। প্রস্তাবিত সময়ের পর প্রায় বছর খানেক পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এই জাহাজের বিষয়ে কোনো তথ্য না পাওয়ায় চিন্তিত ছিলেন অনেকেই। তবে অবশেষে সরকারিভাবে রাশিয়ার নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হল এই জাহাজ। উত্তর মহাসাগরের বুকে দাপিয়ে বেড়াবে এই সামরিক জলযান।

বিগত কয়েক বছরে রাশিয়ার নৌবাহিনী তৈরি করেছে নতুন ধরনের কিছু সামরিক জাহাজ। যুদ্ধের সরঞ্জাম এবং সৈন্য পরিবহনের জন্য এই বিরাট জাহাজগুলি ব্যবহৃত হবে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় জাহাজটিই হল এই আকাদেমিক আলেকজান্দ্রভ। ২০১৭-র মে মাসে প্রথম সমুদ্রে নামে এই জাহাজ। তারপর নানারকম পরীক্ষা ও পরিবর্ধনের পর অবশেষে নৌবাহিনীর অধিকারে এল এটি। মূলত নৌবাহিনীর গোপন অপারেশনের জন্যই ৯৬ মিটার লম্বা এই জাহাজটি ব্যবহৃত হবে। জাহাজের মধ্যে থাকবে বেশ কয়েকটি সাবমেরিন। সম্পূর্ণ পারমাণবিক শক্তিতে চালিত এই সাবমেরিনগুলির প্রযুক্তিও বেশ রহস্যজনক। জানা গিয়েছে, কোনোরকম রাডারের সাহায্যেই এই সাবমেরিনের অস্তিত্ব বোঝা সম্ভব নয়। সমুদ্রের ৭০ ফুট নিচে এই সাবমেরিন তাই কী করতে পারে, সেই আন্দাজ পাওয়া মুশকিল।

রাশিয়ার নৌবাহিনীর উন্নত অস্ত্রশস্ত্রের কথা সর্বজনবিদিত। অন্য দেশের সেনাবাহিনীও রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে থাকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনেক অস্ত্রও এসেছে রাশিয়া থেকে। তবে বেশ কিছু অস্ত্রের প্রযুক্তি সম্পূর্ণভাবে গোপন রেখেছে রাশিয়া সরকার। এই নতুন সামরিক জাহাজে ব্যবহৃত হবে তেমনই সব সামরিক অস্ত্র। আর উত্তর মহাসাগরের বুকে এমন জাহাজ স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক রাজনীতির আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। উত্তর সাগরের বুকে একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারার অর্থ, ইউরোপের অনেক দেশের উপরেই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারা। এর ফলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার শক্তি যে অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।