সৌরমণ্ডলের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি। এই গ্রহকে ঘিরে মানুষের মনের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক কালেই। আজকের বিজ্ঞানীদের কাছেও বৃহস্পতিকে ঘিরে উৎসাহের অন্ত নেই। গ্রহটির বিরাট ম্যাগনেটোস্ফিয়ার হোক বা উজ্জ্বল অরোরা অথবা বিরাট গোলাকার মেঘসারি, বিরাট গ্রহটিকে ঘিরে থাকে অসংখ্য অজানা রহস্য। আর সেই রহস্যের যবনিকা সরিয়ে ফেলতেই মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে নাসার জুনো স্পেসক্রাফট। ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে এই মহাকাশযান। বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলের একাধিক ছবি এসে পৌঁচেছে বিজ্ঞানীদের হাতে। আর সেইসব বর্ণময় ছবি দেখে অবাক বিজ্ঞানীরাও।
বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলের রহস্যময় মেঘ বিজ্ঞানীদের কাছে সবচেয়ে বেশি আগ্রহের বিষয়। জুনো স্পেসক্রাফটের প্রকৃত উদ্দেশ্যই হল এই রহস্যময় মেঘ সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান করা। সেই কাজটিও শুরু করে দিয়েছে জুনো। মেঘপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮৬৫০ কিলোমিটার উপর থেকে একটি টপোগ্রফিক মানচিত্র তৈরি করেছে জুনো। নাসার গবেষণাগারে বসে সেই মানচিত্র প্রসেস করেছেন কেভিন গিল। ২১ এমবি আয়তনের এই বিস্তৃত মানচিত্র দেখে সত্যিই হতবাক বিজ্ঞানীরা।
বৃহস্পতির মেঘের স্তরের উপর ঠিক যেন এক পাহাড়ি ভূপ্রকৃতির ছবি ফুটে উঠেছে। কোথাও কোথাও তার উচ্চতা অস্বাভাবিক রকমের বেশি। আবার প্রান্তের দিকে ক্রমশ কমে এসেছে উচ্চতা। ঠিক যেন অসংখ্য পর্বতমালা নিজেদের আঁকড়ে ধরেছে। এই ছবি দেখলে প্রথমেই মাথায় আসবে ইম্প্রেশনিস্ট ঘরানার চিত্রশিল্পগুলির কথা।
বৃহস্পতির এই মেঘের পিছনে প্রকৃত রহস্য কী, সে বিষয়ে এখনই কোনো উত্তর দেওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে জুনো স্পেসক্রাফটের সাহায্যেই আগামী দিনে এই তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই কাজের পরিকল্পনার জন্যই দরকার ছিল এই টপোগ্রাফিক মানচিত্র। অতএব সবে পথচলা শুরু বিজ্ঞানীদের। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো কাঙ্খিত উত্তর খুঁজে পাবেন তাঁরা। আর সেইসঙ্গে সমাধান হবে হাজার বছরের পুরনো কোনো রহস্য।