চাঁদের পর এতদিন নজরে ছিল মঙ্গল। এবার নাসার নজর এসে পড়েছে সৌরমণ্ডলের আরেক সদস্যের ওপর। ‘ইনি’ শনি গ্রহের উপগ্রহ, টাইটান। পরবর্তী পরিকল্পনায় এই টাইটানেই অভিযানের পরিকল্পনা করেছে নাসা। আর এর জন্য ঠিক করা হয়েছে ‘ড্রাগনফ্লাই’-কে, অর্থাৎ কিনা ফড়িং! যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব নেই বলে জানে সবাই, সেখানে কিনা একটি পোকাকে পাঠানো হচ্ছে!
আরও পড়ুন
মহাকাশে পাঠানো হবে ব্যোম মিত্র-কে, ঘোষণা ইসরোর
ড্রাগনফ্লাইকে পাঠানো হচ্ছে বটে, কিন্তু এটি কোনো প্রাণী নয়। বরং একটি স্পেসক্রাফট। নাসার পরবর্তী মিশনের লক্ষ্য টাইটান। সেখানেই পাঠানো হবে এই বিশেষ যানটিকে। ড্রোনের মতো দেখতে এই স্পেসক্রাফটির এমনই নাম দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। দীর্ঘ বেশ কয়েকবছর ধরেই নাসার অন্যতম লক্ষ্য হল টাইটান। শনির সবচেয়ে বড়ো এই উপগ্রহটির সঙ্গে পৃথিবীর বেশ কিছু মিল নাকি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার ক্যাসিনি স্পেসক্রাফট বিগত ১৩ বছর ধরে টাইটানকে পরীক্ষা করছে। সেখান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এইসব সিদ্ধান্তে আসছেন তাঁরা। এবার এই ‘ড্রাগনফ্লাই’ স্পেসক্রাফট সরাসরি টাইটানের বায়ুমণ্ডলে ঢুকে সেখান থেকে পরীক্ষা চালাবে।
আরও পড়ুন
মহাকাশ-ফেরত বিজ্ঞানীর শরীরে করোনা, মহাকাশেও আশঙ্কা সংক্রমণের
১৬৫৫ সালে বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান হুগেন্স টাইটানের কথা প্রথম সামনে আনেন। বর্তমান সময়ের মহাকাশ গবেষণায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে এই উপগ্রহটি। এর পেছনে বেশ কিছু কারণও দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রথমত, সমগ্র সৌরজগতের মধ্যে টাইটানই হল একমাত্র উপগ্রহ, যার একটি নিজস্ব ও ঘন বায়ুমণ্ডল আছে। আমাদের চাঁদেরও আছে, কিন্তু সেটা অত্যন্ত কম; সেটাকে নেই-এর খাতাতেই ধরা হয়। মাধ্যাকর্ষণও খুব কম। এছাড়াও, আরেকটা বড়ো কারণ হল, টাইটানের বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে পৃথিবীর বেশ কিছু মিল আছে। নাইট্রোজেনের পরিমাণ ওখানে অনেকটা বেশি, প্রায় ৯৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন কার্বন কম্পাউন্ড; তবে বিষাক্ত মিথেন গ্যাসও রয়েছে। তবে অসুবিধাও আছে। টাইটানের বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন নেই।
এছাড়াও টাইটানের ঘন বায়ুমণ্ডলের নিচে কী রয়েছে, কী চলছে সেটা অনেকটা অজানাই রয়ে গেছে। সেসব খুঁজতেই মূলত ‘ড্রাগনফ্লাই’-এর যাওয়া। সেইসঙ্গে টাইটানের আগেকার পরিস্থিতি কীরকম ছিল, সেই সম্পর্কেও জানার চেষ্টা করা হবে। সব মিলিয়ে, নতুন করে আবার মাঠে নামছে নাসা, সঙ্গে রয়েছে ‘ফড়িং’।