কথায় বলে, ‘তোর কচু হবে!’ কচু মানেই একরাশ অবজ্ঞা, যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন। কচু হওয়া মানেই লোকসান। আজন্ম এই অপমান বয়ে বেরিয়েই বাংলার মাঠে-ঘাটে অনাহূতর মতো বেড়েছে কচুর ঝোপ। হেঁশেলে অবশ্য কচুর লতির খানিক আদর জুটেছে। বাবু-গিন্নিরা চেটেপুটে খেয়ে আহা-বাহা করেছেন। কিন্তু, ঐটুকুতে কী আর গৌরব বাড়ে! কচু-চাষিদের ভাগ্যেও তাই লাভ দেখা দিত কই! কিন্তু, এবারে যেন সব অবজ্ঞার উত্তর দিতেই কোমর বেঁধে নেমেছে নলহাটির কচুরা। একজোট হয়ে তারা পাড়ি দিচ্ছে ইউরোপে।
ভাবছেন, গল্পের গরু গাছে উঠছে! না না, এ সত্যি ঘটনা। বীরভূমের নলহাটিতে প্রচুর কচুর চাষ হয়। সেই কচুই এবার পাড়ি জমাবে লন্ডন, ইতালি, জার্মান-সহ ইউরোপের বহু দেশে। বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে রপ্তানি করা হবে এই কচু। তার জন্য রামপুরহাটের ধুলোডাঙা রোডে ‘সুফল বাংলার’ স্টলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এক্সপোর্ট হাবও খোলা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং ঘোষণা করেছেন নলহাটির কচুর ইউরোপ যাত্রার খবর।
নলহাটির কচু-চাষিরা জানাচ্ছেন, স্থানীয় বাজারে এক কুইন্টাল কচুর দাম ২৫০০ টাকা। এক্সপোর্ট হাবে সেই কচুর দামই একলাফে বেড়ে যাচ্ছে অনেকটা। এতে লাভ বাড়বে, ভাগ্যও ফিরবে কচু-চাষিদের। এরপর যদি কেউ বলেন, “তোর কচু হবে!”—সেই বাক্যকে আশীর্বাদ হিসেবেই গণ্য করবেন চাষিরা। যে সবজির কদর বিদেশেও, সে তো লক্ষ্মী! মাঠঘাট ভরিয়ে এমন কচু আরো হোক।