বছরের শেষলগ্নে চলে এসেছি সবাই। বড়দিন এবং নতুন বছরের আবহে এখনই মেতে উঠেছে শহর। এই ঐতিহ্যের সঙ্গেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে ফ্রুট কেক। আর কলকাতায় এই কেকের রাজত্বে প্রায় ১২০ বছর ধরে নিজের সাম্রাজ্য ধরে রেখেছে নাহুমস।
কেক, আর নাহুমস— এই দুটো যেন সমার্থক এখানে। সেলেব্রিটি শেফ থেকে ফুড ব্লগার— কলকাতায় এলে একবার অন্তত এখানে পা পড়া চাই। আর নিউ মার্কেটের এই দোকানটি শহরের হেরিটেজের সঙ্গে একদম মিশে গেছে। আর তার সূত্রপাত ১৯০২ সালে। নাহুম ইজরায়েল মরদেকাই নামের এক ইহুদি তৈরি করেন এই বেকারির দোকান। বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুরুর দিকে কেক, পেস্ট্রি বিক্রি করতেন তিনি। পরে, ১৯১৬ সালে নিউ মার্কেটে শুরু করেন নিজের দোকান। আজও যে দোকান স্বমহিমায় বিরাজমান।
বয়সে বৃদ্ধ হলেও, এখনও ভেঙে পড়েনি নাহুমস। সেই পুরনো সময়ের মতো এখনও রমরমিয়ে চলছে। যত দিন যাচ্ছে, কলকাতা জুড়ে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন বেকারি। অত্যাধুনিক কেকশপে লোকেরা ভিড় জমাচ্ছে। তার মধ্যেও নিজের জায়গা ধরে রেখেছে এই প্রাচীন দোকানটি। বর্তমান মালিক আইজেক নাহুম নিজে থাকেন ইজরায়েলে। কিন্তু শীতের সময় যাই কাজ থাকুক না কেন, চলে আসেন নিউ মার্কেটে। এই দোকান যে তাঁর কাছে শুধু দোকান নয়। পরিবারেরই এক অংশ।
আর বাঙালি? বড়দিনের বাজারে একবার হলেও চলে যাবে নাহুমসে। কলকাতার শীতের আস্তানা হয়ে গেছে এটি। ফ্রুট কেক থেকে কুকি, প্যাটিস, পুডিং, বিস্কুটের প্রায় ৪০ রকমের সম্ভার নিয়ে সে বসে আছে। যার গায়ে বঙ্গভঙ্গ, অসহযোগ, স্বাধীনতা, দেশভাগ, নকশাল— কতই না আঁচড় লেগেছে। সাক্ষী থেকেছে। আর সেই স্পর্শই শহরের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছে প্রায় ১২০ বছরের এই দোকানটি।