“গণহত্যাকারীদের অলিম্পিকে স্থান দেওয়া উচিৎ নয়।” মায়ানমারের বিখ্যাত সাঁতারু উইন টিট উ তাই আবেদন জানালেন, তাঁর দেশকে যেন অলিম্পিক থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেইসঙ্গে টোকিও অলিম্পিকের আসর থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখবেন, এমনটাই বক্তব্য তাঁর। বিগত ৩ মাস ধরে মায়ানমারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এভাবেই প্রতিবাদে সামিল হলেন উইন টিট উ।
মায়ানমারের শ্রেষ্ঠ সাঁতারু হিসাবে স্বীকৃত উইন টিট উ। ২০১৩ এবং ২০১৯-এর সাউথ এশিয়ান গেমসে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি তিনি আসন্ন অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছিলেন। ট্রেনিং-এর জন্যই তিনি এখনও রয়েছেন মেলবোর্ন শহরে। কিন্তু এর মধ্যেই মায়ানমারের সাধারণ মানুষের উপর সামরিক সরকারের নির্মম হত্যালীলা তাঁকে কুণ্ঠিত করেছে। এই তিন মাসে কত লক্ষ মানুষ সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, তার কোনো সঠিক হিসাব নেই। টিট উ-র এই মন্তব্য সম্পর্কে অবশ্য স্পষ্ট কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি দেশের ন্যাশানাল অলিম্পিক কমিটির পক্ষ থেকে। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, টোকিও অলিম্পিকের প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য স্থান পাননি টিট উ। তাই তাঁর প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগও থাকে না। অন্যদিকে অনেকে মনে করছেন, সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্যই তাঁকে অলিম্পিকের প্রতিনিধি হিসাবে বেছে নেওয়া হয়নি।
মাত্র ১০ বছর আগে মায়ানমারের সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে সু কি-র নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল গণতন্ত্র। অবশ্য সামরিক বাহিনীর শক্তি সম্পূর্ণ কেড়ে নেওয়া হয়নি। ২০১৭-১৮ সাল থেকে জাতিপুঞ্জ সু কি-কে বারবার এই বিষয়ে সচেতন করেছে। রোহিঙ্গা বিরোধী দাঙ্গার সময় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। আর তার অন্তিম ফলশ্রুতি হিসাবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সু কি-কে সরিয়ে আবারও সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ রাস্তায় নামলে তাঁদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। জাতিপুঞ্জের মতে, এই গণহত্যা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গণহত্যা। এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে উইন টিট উ-র মতো ব্যক্তিত্বের প্রতিবাদে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অনেকেই।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
আশিয়ানের বৈঠকেও অনুচ্চারিত রাজবন্দিদের মুক্তি-প্রসঙ্গ, ক্ষুব্ধ মায়ানমারের নাগরিকরা