মন্দিরের রাস্তা তৈরিতে জমিদান মুসলমানদের, সম্প্রীতির নজির কেরলে

বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। এই নিয়েই তো ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া। এবার আরও একবার তার প্রমাণ মিলল কেরলে (Kerala)। ৫০০ বছরের পুরনো মন্দিরের রাস্তা নির্মাণ করার জন্য জমি দান করে ঐক্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়লেন কেরলের ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা।

কথা হচ্ছে, কেরলের কুটিলাঙ্গাদি পঞ্চায়েতের কাদুনগুথ মহাদেব মন্দির নিয়ে। এই মন্দিরের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাব্দীর এক দীর্ঘ ইতিহাস। যুগে যুগে এই মন্দির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। আজও এই মন্দিরের অবাধ প্রবেশাধিকার রয়েছে ইসলাম ধর্মের মানুষদের। 

তবে বিগত কয়েক বছর ধরেই সংরক্ষণের অভাবে ধুঁকছিল কেরলের এই ঐতিহ্যবাহী মহাদেব মন্দির। সেইসঙ্গে সংকীর্ণ পথে যাতায়াত করাও হয়ে উঠেছিল দুষ্কর। মন্দির সংরক্ষণের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার সরকারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তাতে পঞ্চায়েত ও বিধায়কের তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য মিলেছিল ঠিকই, কিন্তু মন্দির কতৃপক্ষের কাছে প্রশস্ত রাস্তা তৈরির মতো জমি না থাকায় আটকে ছিল সেই প্রকল্প। 

সম্প্রতি, সেই সমস্যার সমাধান করলেন দুই ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি। কুটিলাঙ্গদি পঞ্চায়েতেরই বাসিন্দা আবুবকর হাজি এবং এম উসমান মন্দিরের রাস্তা নির্মাণের জন্য দান করলেন প্রায় চার সেন্ট জমি। এই জমির ওপরেই তৈরি হবে ১০ ফুট প্রশস্ত ৬০ মিটার দীর্ঘ পাকা রাস্তা। তাতে স্থানীয় মানুষরা উপকৃত হবেন তো বটেই, সেইসঙ্গে পর্যটকদের আনাগোনাও বৃদ্ধি পাবে বলেই অভিমত মন্দির কর্তৃপক্ষের। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই এই রাস্তা নির্মাণের কর্মযজ্ঞ শুরু হবে বলেই জানাচ্ছেন কুটিলাঙ্গাদি পঞ্চায়েতের প্রধান। শুরু হবে মন্দির সংস্করণের কাজও। 

আরও পড়ুন
গুরুদ্বারায় নামাজ পাঠ, সম্প্রীতির নজির গড়তে চলেছে গুরগাঁও

সাম্প্রতিক সময়ে, গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমজুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে সাম্প্রতিক হিংসা এবং ঘৃণার সংবাদ। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কেরলের এই ঘটনা যেন মানবতার প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে দিচ্ছে মানুষের। ভারত যে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ কেরলের এই গ্রাম। চাইলেও ধর্মের অছিলায় তার বুকে বিভেদরেখা বসানো সম্ভব নয়…

আরও পড়ুন
মন্দির বাঁচাতে এগিয়ে এলেন মুসলিমরাই, সম্প্রীতির বিরল দৃষ্টান্ত দিল্লিতে

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ মালারকোট, পেল পৃথক জেলার স্বীকৃতিও