পরিসংখ্যান নেওয়া হয়েছিল ঠিক ৩ বছর আগে। আর সেই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এবছর গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলতে চলেছেন মিস্টার ট্র্যাশ হুইল। ইনি আসলে কোনো মানুষ নন। নিছক একটি যন্ত্র মাত্র। কিন্তু মানুষের জন্য এই যন্ত্রের অবদান এক কথায় অনবদ্য। দৈনন্দিন জীবনে অবশ্য কাজে লাগে না এই যন্ত্র। এর কাজ মূলত নদী থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করা। আর সেই কাজের স্বীকৃতি হিসাবেই এই শংসাপত্র পেতে চলেছে যন্ত্রটি।
২০১৭ সালে আমেরিকার মেরিল্যান্ড স্টেটের বালটিমোর নগর কর্তৃপক্ষ প্রথম ব্যবহার করে এই যন্ত্রটি। ওয়াটারফ্রন্ট প্রকল্পের জন্য এই যন্ত্রটি তৈরি করেছিলেন সেই শহরেরই একজন উদ্ভাবক, জন কেলেট। আর তারপরেই সে-বছর এপ্রিল মাসে জন ফলস নদীর উপর কাজ শুরু করে এই বিশালাকার যন্ত্রটি। সম্পূর্ণভাবে সৌরবিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল এই যন্ত্র। নিজের প্রয়োজনীয় শক্তি নিজেই উৎপাদন করে নিতে পারে। বাইরে থেকে কোনো বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন পড়ে না। আর ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে যন্ত্রটি নদী থেকে মোট ৬৩.৩ মেট্রিক টন আবর্জনা পরিষ্কার করে। গিনেস বুকের তথ্য অনুযায়ী, একমাস সময়ের মধ্যে এতো বেশি আবর্জনা পরিষ্কারের দক্ষতা আগে কোনো যন্ত্র দেখাতে পারেনি।
গিনেস বুকের এই সংসাপত্রকে তিক্ত-মধুর আখ্যা দিয়েছেন ওয়াটারফ্রন্ট প্রকল্পের ডিরেক্টর অ্যাডাম লিন্ডকুইস্ট। তাঁর মতে এই ঘটনা দুরকম ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রথমত, জলদূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছেন বালটিমোর নগর কর্তৃপক্ষ। এই সাফল্য নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়। কিন্তু পাশাপাশি এমন উদ্যোগের যে প্রয়োজন পড়ছে, সেটা আদৌ সুখের বিষয় নয়। বরং একাধিক সচেতনতা উদ্যোগের পরেও মানুষ এখনও নদীর উপর কতটা অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, তাই ধরা পড়ছে এক্ষেত্রে। লিন্ডকুইস্ট মনে করেন, এমন দিন আসন্ন যখন আর মিস্টার ট্র্যাশ হুইলের কোনো প্রয়োজন পড়বে না। সেদিনই আসবে প্রকৃত সাফল্য।