মাত্র তো এক বোতল জল। ভাবছেন কত আর দাম হবে? বাজারে নামিদামি ব্র্যান্ডের মিনারেল ওয়াটারের বোতল পাওয়া যায় ২০-৩০ টাকায়। কিন্তু যদি বলা হয় একটি জলের বোতলের দাম ৬০ হাজার মার্কিন ডলার! অবাক হবেন না, ২০১০ সালে সত্যিই বিক্রি হয়ে যায় এমন একটি জলের বোতল। তবে এখানেই শেষ নয়। সেই বোতলের দামকেও কয়েকগুণ ছাপিয়ে গিয়ে বাজারে এসে গিয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি জলের বোতল (Most Expensive Bottle of Water)। এখনও অবধি সেই বোতল নিলামে ওঠেনি। তবে ইতিমধ্যে তার দাম ধরা হয়েছে ৪০ লক্ষ ইউরো, অর্থাৎ প্রায় ৪৮ লক্ষ মার্কিন ডলার।
২০১০ সালে মেক্সিকোর হ্যাসিয়েন্ডা ডি লস মোরালেস নিলামঘরে প্রদর্শিত হয় একটি জলের বোতল। বোতলটি সম্পূর্ণ সোনার তৈরি। শুধু তাই নয়, কোনো কারখানায় ছাঁচে ফেলা বানানো বোতল নয় সেটি। ইতালির শিল্পী আমেদিও ক্লিমেন্ট মডিগিলানির একটি পোট্রেটের আদলে মূর্তিটি তৈরি হয়েছিল সম্পূর্ণ হাতে ঢালাই করে সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার জন্যই তৈরি করেছিলেন এই জলের বোতল। এবং শিল্পীদের উদ্দেশ্যও ছিল খুবই পরিষ্কার। বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধের উদ্দেশ্যে নানা প্রকল্পের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেই জলের বোতলটি তৈরি করেছিলেন তাঁরা। আর এই কাজের জন্য জলকেই বেছে নিয়েছিলেন, কারণ জলই বাস্তুতন্ত্রের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান। মানুষ যদি জলের মূল্য বুঝতে পারে, তাহলেই পরিবেশ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
২০১০ সালের বোতলটি বিক্রির পর কেটে গিয়েছে আরও এক দশক। নিলাম থেকে সংগৃহীত অর্থও খরচ হয়ে গিয়েছে এতদিনে। এর মধ্যে ২০২০ সালে মডিগিলানির মৃত্যুর ১০০ বছর পূর্ণ হল। ফলে শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে আরও বড়ো কিছু করার পরিকল্পনা নিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। এবারেও বোতলের কাঠামো একই আছে। তবে সোনার বদলে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাটিনাম। এখানেই শেষ নয়। প্লাটিনামের বোতলের উপর খোচিত রয়েছে ৬০ হাজার হিরে। হ্যাঁ, এমন একটা বোতলের দাম তো বেশি হবেই। তবে শুধু বোতলটি নয়, বোতলের মধ্যে থাকা জলটির দামও কিছু কম নয়। ফিজি এবং ফ্রান্সের বসন্তকালের নির্মল জলের সঙ্গে মেশানো হয়েছে পৃথিবীর কয়েকটি বিখ্যাত হিমবাহের জল। এমন জলের কিছুটা গলায় ঢালতেও সম্ভ্রম হয় বৈকি! আপাতত কিছুদিনের মধ্যেই নতুন এই বোতল নিলামে উঠতে চলেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি জলের বোতলের দাম শেষ পর্যন্ত কত অঙ্ক ছোঁয়, সেটাই দেখার।
Powered by Froala Editor