পরিবেশ বিপদে, সংকটে জীবনও। যত দিন যাচ্ছে, পৃথিবীর প্রাণীজগতের বিপদ আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শঙ্কার কথা শোনাচ্ছে। এবার সেই কেন্দ্রবিন্দুতেই হাজির হল কচ্ছপ এবং কাছিমরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই দুই সরীসৃপ অত্যন্ত বিপদের মধ্যে রয়েছে। এদের অর্ধেকেরও বেশি প্রজাতি আজ অস্তিত্বের সংকটে। আর তার জন্য দায়ী আমরাই…
আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘কারেন্ট বায়োলজি’-তে ৫১ জন কচ্ছপ-কাছিম গবেষকরা এই বিশেষ রিপোর্ট পেশ করেছেন। গোটা পৃথিবী জুড়েই তাঁরা এই প্রাণীদের ওপর সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। সেখানে বলা হচ্ছে, মোট ৩৬০টি কচ্ছপ আর কাছিমের প্রজাতির মধ্যে অন্তত ১৮৭টির অবস্থা সংকটে। এরই মধ্যে ১২৭টি প্রজাতির সংখ্যা এমন জায়গায় নেমে এসেছে যে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই শতাব্দীর মধ্যেই তারা পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে! আর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা প্রজাতিগুলির অনেকটাই ছড়িয়ে রয়েছে মাদাগাস্কার দ্বীপে।
কিন্তু কেন এরকম অবস্থা? এর উত্তর দিতে গিয়ে গবেষকরা আঙুল তুলেছেন বেশ কয়েকটা দিকে। প্রথমত নিজের পছন্দমতো পরিবেশের অভাব। শহর বাড়ছে; সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জোরালো আলো আর শব্দ। আর তাতেই বিপদে পড়ছে কচ্ছপ ও কাছিমরা। জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে, বন জঙ্গল কাটা পড়ছে। তারই মধ্যে চলছে চোরাশিকার। এখনও নানা জায়গা থেকে কচ্ছপ পাচারের খবর পাওয়া যায়। পরিবেশ দূষণের কারণেও বিপদে পড়েছে এরা। সমুদ্রের নিচে প্লাস্টিকে মুখ আটকে পড়ে আছে কচ্ছপ, এমন ছবিও আমরা দেখেছি। সমুদ্রের ধারে জোরালো আলো কচ্ছপদের বংশবিস্তারেরও ক্ষতি করছে। আর তার ফলেই একের পর এক কচ্ছপ এবং কাছিম বিপদের মুখে পড়ছে।
মাদাগাস্কারের প্রসঙ্গ টেনেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, সেখানে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাখা হচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপ-কাছিমদের। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে কি? গোটা পৃথিবীতে কমে আসা সংখ্যা সেই প্রশ্নটিই তুলছে। বারবার বলা সত্তেও আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এরকমভাবে চললে কচ্ছপ আর কাছিমরা আমাদের চারপাশে আর থাকবে না, আশঙ্কা গবেষকদের।
আরও পড়ুন
বিলুপ্তির মুখে ৫০০টিরও বেশি প্রাণী প্রজাতি, সাবধান করে দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
১২টি প্রজাতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন কার্ল জোনস, ৫০ বছরের বিরল কীর্তি