বছরের প্রথম থেকেই একের পর এক বিপর্যয় যেন জড়িয়েই রয়েছে ভারতের সঙ্গে। এক প্রান্তে বিপদ কাটতে না কাটতেই অন্যপ্রান্তে দেখা দিচ্ছে আরেক বিপত্তি। প্রায় মাসখানেকের লড়াইয়ের পর যখন অসমের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হল। ঠিক সেই সময়েই ভয়াবহ রূপ ধারণ করল বিহারের বন্যার চেহারা।
এখনও পর্যন্ত বিহারে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ১৪টি জেলার ১০১২ পঞ্চায়েত। রয়েছে পূর্ব এবং পশ্চিম চম্পারণ, দ্বারভাঙা, মুজফফরপুর, সিতামারহী, সমষ্টিপুর, খাগারিয়া, কিষানগঞ্জ, সরন, সিওয়ান, শাপল এবং শেওহর। সবমিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে নীতিশ কুমারের রাজ্যে এখনও অবধি বন্যা কেড়েছে ১২ জন মানুষের প্রাণ।
প্রশাসনের সূত্রে খবর, রাজ্যের সব নদীই এই মুহূর্তে বিপদসীমার উপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে গঙ্গা, মহানন্দা, বাগমতী, বোধী গণ্ডক, কমলা বালান। গত কয়েকদিনে নেপালে একটানা বৃষ্টি হওয়ায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে উত্তরের নদীগুলিও।
পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী হাত লাগিয়েছে যৌথভাবেই। প্রায় ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বন্যা কবলিত অঞ্চল থেকে। তৈরি করা হয়েছে কম্যিউনিটি কিচেন-ও। এই উদ্যোগে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় ৮ লক্ষ মানুষ। এছাড়াও উদ্ধারকার্য ও ত্রাণের কাজে এগিয়ে এসেছে বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। বন্যার জেরে বাড়ছে সংক্রমণের সম্ভাবনাও। বিহারে প্রথম থেকেই করোনা পরীক্ষা যে পর্যাপ্ত হচ্ছিল না, সে ব্যাপারে অভিযোগ ছিলই। এবার বন্যা পরিস্থিতিতে ভাইরাসের সংক্রমণ রোখাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিহার প্রশাসনের কাছে।
বিহারের উদ্বেগের সবথেকে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মুজাফফরপুরের, সমষ্টিপুর এবং দ্বারভাঙার পরিস্থিতি। ক্রমশই এই তিন জেলাকে গ্রাস করছে বন্যা। মধ্য-পূর্ব রেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন বন্যার জল জমে যাওয়ার ব্যহত রেল পরিষেবাও। বন্যার জলে ডুবেছে সমষ্টিপুর ও দ্বারভাঙার তিনটি রেলব্রিজ। বেশ কিছু বিশেষ ট্রেনের গতিপথ পাল্টে দেওয়া হয়েছে যার কারণে। বাতিলও করা হয়েছে কিছু ট্রেন।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি উত্তরবঙ্গে, শিলিগুড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল ডুয়ার্স