২০০-র বেশি প্রাগৈতিহাসিক গুহাচিত্র আবিষ্কৃত তামিলনাড়ুতে

প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা বলতে একটা দীর্ঘ সময় ধরে প্রাধান্য দেওয়া হত সিন্ধু সভ্যতাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। সিন্ধুর পাশাপাশি প্রাচীন সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল দক্ষিণ ভারতেও। তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu) মিলেছে তার একাধিক প্রমাণও। এবার দক্ষিণের এই রাজ্যের বার্গুর অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া গেল প্রায় ২০০টিরও বেশি প্রাগৈতিহাসিক গুহাচিত্র (Cave Painting)।  

একটি বেসরকারি প্রত্নতাত্ত্বিক দলের তিন স্বেচ্ছাসেবক সম্প্রতি বার্গুর পাহাড়-সংলগ্ন জঙ্গলে একটি আদিবাসী উৎসবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। আর সেখানেই একটি প্রায় ধ্বসে পড়া গুহা আবিষ্কার করেছিলেন তাঁরা। গুহাটির নাম রুক্কাল মুনিয়াপ্পান। এটি মুনীশ্বরের আঞ্চলিক দেবতার স্থান। এই দেবতা শোলাগর, কুরুম্বর এবং বেদগম্পানা লিঙ্গায়াৎ-সহ বিভিন্ন আদিবাসীদের উপাস্য। 

গুহার ভেতরে ৩০ ফুট উঁচু এবং ২৫০ ফুট লম্বা একটি শিলার উপরে লাল এবং সাদা রঙ দিয়ে আঁকা অপূর্ব চিত্রকল্প চোখের পড়ে স্বেচ্ছাসেবকদের। সেখানে মানুষের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হরিণের পাল। এমন আদিম শিকারের দৃশ্য বাদ দিলেও অনামী শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় পাথরের গায়ে ফুটে উঠেছে বাঘ, হাতি সহ অন্যান্য বন্যপশুর অবয়ব। শিলার শীর্ষে রয়েছে এক দেবীর চিত্র। প্রায় ৪ ফুট জুড়ে। তাঁর পায়ের তলায় দেখা যাবে দুটি হরিণ-সহ কিছু পশুকে। দেবী যেন বনবাসী মানুষকে শিকার জোগাচ্ছেন। এই দেবীর সঙ্গে থিরুবন্নামালাই জেলার আঞ্চলিক দেবীর সাদৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। 

প্রস্তরচিত্র বিশেষজ্ঞ কে.টি. গান্ধিরজনের মতে, এই চিত্রগুলিকে তিনটে সারিতে ভাগ করলেই, তাদের অন্তর্নিহিত অর্থগুলি পরিষ্কার হয়ে পড়ে। যেমন মাঝের সারিতে একটি অর্ধচন্দ্রাকৃতি বস্তুর উপর দাঁড়িয়ে মানুষ। গান্ধীরজন যেটিকে বলেছেন, ‘নৌকা’। এছাড়া অন্যান্য সারিগুলি ভালোভাবে দেখলে চোখে পড়বে, কখনো মৃগয়ার দৃশ্য, কখনো উৎসব, কখনো বা যুদ্ধের দৃশ্য। এ যেন আঞ্চলিক ইতিহাসকেই লাল-সাদা রঙে পাথরের গায়ে ফুটিয়ে তুলেছেন আদিম শিল্পীরা।

আরও পড়ুন
পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম মহামূল্যবান গ্রন্থের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অভিশাপও!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সিনেমা দেখে অনুপ্রেরণা, ২৬ শিশুকে জ্যান্ত কবর, মার্কিন ইতিহাসের করুণ অধ্যায়