প্যারিসের আইফেল টাওয়ার থেকে শুরু করে জার্মানির ব্রানডেনবুর্গার গেট, নিউইয়র্কের আম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, দুবাইয়ের বুর্জ খালিফা বা ইস্তানবুলের বসফরাস সেতু— এই সকল স্থাপত্যগুলি সংশ্লিষ্ট শহরের শুধু ঐতিহ্যই নয়, প্রতীকও বটে। কিন্তু একই সঙ্গে এই সমস্ত স্থাপত্যেই অন্ধকার ঘনিয়ে আসে যদি? গত শনিবার দেখা গেল তেমনই দৃশ্য। এক ঘণ্টার জন্য অন্ধকারে ডুবে ছিল বিশ্বের বিখ্যাত স্থাপত্যগুলি। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রকৃতি রক্ষায় সচেতনতা গড়ে তুলতে এভাবেই পালিত হল ‘আর্থ আওয়ার’ (Earth Hour)।
২০০৭ সালের কথা। পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রথম ‘আর্থ আওয়ার’ পালনের উদ্যোগ নিয়েছিল ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (World Wildlife Fund) (ডব্লুডব্লুএফ)। মার্চ মাসের শেষ শনিবার এক ঘণ্টার জন্য পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তের বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
২০০৭ সালে শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়াই সামিল হয়েছিল এই উদ্যোগে। তারপর থেকে ক্রমশ বেড়েছে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা। চলতি বছরে ১৫তম বর্ষে পা দিল আর্থ আওয়ার ডে। গত শনিবার ১৯০টিরও বেশি দেশ অংশ নিয়েছিল এই বার্ষিক সচেতনতামূলক ইভেন্টে। শুধু সরকারি বা ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যগুলিই নয়, সাবলীলভাবেই অংশগ্রহণ করেছিলেন সাধারণ মানুষও। সন্ধে সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল বৈদ্যুতিক আলো।
তাপশক্তি বা পারমাণবিক শক্তির পরিবর্তে অপ্রচলিত শক্তির উৎসকে আরও বেশি করে কাজে লাগানোই এই প্রচারের মূল উদ্দেশ্য। তবে শক্তি সঞ্চয়ের পাশাপাশি আরও নানানধরনের সচেতনতামূলক প্রচারের উদ্যোগ নেয় ডব্লুডব্লুএফ। ২০১৩ সালে উগান্ডার সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রথম আর্থ আওয়ার ফরেস্ট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনায় ৩৪ লক্ষ হেক্টর সামুদ্রিক অঞ্চল সংরক্ষিত করতে পাস হয়েছিল বিশেষ সিনেট বিল।
আরও পড়ুন
মেরু প্রদেশে তাপপ্রবাহ, জলবায়ু পরিবর্তনের চরম পর্যায়ে পৃথিবী
ভারতের কিছু মানুষ এই বৈশ্বিক উদ্যোগে সামিল হলেও, এই বিশেষ ইভেন্ট সম্পর্কে সেইভাবে এখনও সচেতনতা গড়ে ওঠেনি এ-দেশে। তবে ধীরে ধীরে ভারতও সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হয়ে উঠবে ‘আর্থ আওয়ার’-এর, সে ব্যাপারে আশাবাদী পরিবেশকর্মীরা…
আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়ছে পারমাণবিক বিদ্যুতের দাবি
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
তুষারপাতের পরিবর্তে বৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার মেরু অঞ্চল