মাত্র আটটা গ্রহ আর কয়েকটা উপগ্রহ, বড়জোর কিছু বামন-গ্রহ। এটুকুই সাধারণ মানুষের জানার পরিধি মহাবিশ্ব সম্পর্কে। কিন্তু বিজ্ঞানীদের কাছে ব্যাপারটা এত অল্পে ফুরোয় না। নিয়ত খোঁজের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁরাও এখনও সঠিক জানেন না, এই সৌরজগতের মধ্যেই কত বৈচিত্র্য লুকিয়ে আছে। সম্প্রতি, এক আবিষ্কার সাড়া ফেলেছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। খুঁজে পাওয়া গেছে ১০০টি মহাজাগতিক বস্তু। তাদের মধ্যেও আবার নিজস্ব জগৎ আছে।
আরও পড়ুন
চাঁদই একমাত্র নয়, পৃথিবীর আরও একটি ‘উপগ্রহের’ সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা
গবেষণা চলছিল ডার্ক এনার্জি নিয়ে। বিজ্ঞানীদের অধিকাংশ তত্ত্বকেই পরিণতি পেতে দেয় না এই ডার্ক এনার্জি। আর তাই খোঁজার চেষ্টা হচ্ছিল তার রহস্য। দূরবীন বসেছিল ছোট্ট দ্বীপ চিলিতে। গবেষণার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছেন গবেষকরা। আর সেই ভিক্টর এম. ব্লাঙ্কো দূরবীন থেকেই ধরা পড়ল ১০০টি নতুন জগৎ। এরা কেউ কেউ প্রথম থেকেই সৌরজগতের অংশ, কেউ আবার অন্য কোনো নক্ষত্রের থেকে এসেছে। কোনো কোনো বস্তু আবার এখনও কোনো নির্দিষ্ট জগতে থিতু হতে পারেনি। এরা প্রত্যেকেই যে সূর্যের চারিদিকে ঘোরে, এমনটা নয়। অত দূরে সূর্যের মহাকর্ষ শক্তি অনেকটাই কম। তুলনায় তাদের নিজেদের মহাকর্ষ শক্তি বেশি। ফলে অনেকেই নিজেদের চারদিকে ঘোরে। কেউ ঘোরে নিকটবর্তী বড় কোনো বস্তুর চারিদিকে।
আরও পড়ুন
মহাকাশে পাঠানো হবে ব্যোম মিত্র-কে, ঘোষণা ইসরোর
নেপচুন আমাদের সৌরজগতের শেষ গ্রহ। একসময় প্লুটোকে গ্রহ বলে মনে করা হত। কিন্তু এছাড়াও যে নেপচুনের কক্ষপথের ওপারে আরও অনেক জগতই আছে, সেকথা ৯০-এর দশকের আগে জানা যায়নি। ক্রমশ দেখা যায়, সূর্যের মহাকর্ষ শক্তি সেখানে বেশ দুর্বল হলেও সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়নি। নেপচুনের ওপারে এখনও অবধি ৩,০০০ এর বেশি বস্তুর অস্তিত্ব জানা গিয়েছে। তবে শেষ পর্যবেক্ষণে দেখতে পেওয়া বস্তুর সংখ্যা মাত্র ১৩৯। সংখ্যা খুব বেশি না হলেও এই পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ এদের অবস্থান প্রায় সীমান্তের দিকে। এমনকি অনেকেই অন্য কোনো নক্ষত্রের কাছ থেকে ছিটকে সৌরজগতের মধ্যেও চলে আসতে পারে। ফলে এদের পরীক্ষা করলে সৌরজগতের ইতিহাস অনেকটাই জানা সম্ভব।
আরও পড়ুন
জানা গেল ডার্ক ম্যাটারের উপাদান, সমাধানের পথে মহাবিশ্বের নানা অজানা রহস্য
গবেষণা চলছে। এখনও অন্তত ২০০ বস্তুর সন্ধান পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। আবার অনেকেই বলছেন, এইসব ছোট ছোট বস্তুগুলোর সঙ্গে থাকতে পারে কোনো গ্রহও। এমন একটা তত্ত্বও তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে। তবে ভিক্টর এম. ব্লাঙ্কোর বিজ্ঞানীরা এমন কথা বিশ্বাস করছেন না। বরং এইসব ছোটপ ছোটো বস্তুগুলোই যে সৌরজগতের মোট ভর সংক্রান্ত হিসেব না মেলার জন্য দায়ী, সেকথাই উঠে আসছে তাঁদের মুখে।