বিজ্ঞানের দৌলতে কত না অজানা তথ্য জানতে পারে মানুষ। এমনকি তা একশো কোটি বছর আগের হলেও। মহাকাশ নিয়ে গবেষণার অন্ত নেই বিজ্ঞানীদের। সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফটেকনোলজির একদল বিজ্ঞানী জানালেন, আজ থেকে চারশো কোটি বছর আগে চাঁদের নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র ছিল, যা পৃথিবীর বর্তমান চৌম্বক ক্ষেত্রের দ্বিগুণ।
চারশো কোটি বছর আগে পৃথিবীর খুব কাছেই ছিল চাঁদ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, তখন হয়তো পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের থেকেও চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্র দেড় বা দুই গুণ শক্তিশালী ছিল। তবে এসবই বহু আগের ঘটনা। ধীরে ধীরে পৃথিবীর পাশ থেকে চাঁদ দূরে সরে যাওয়ায় তার চৌম্বক ক্ষেত্রটি দুর্বল হয়ে আসে।
পৃথিবীর মতোই চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্রটিও সূর্য থেকে আগত বিভিন্ন রশ্মির হাত থেকে চাঁদকে রক্ষা করত। কিন্তু একশো কোটি বছর আগেই চাঁদের এই চৌম্বক ক্ষেত্র অদৃশ্য হয়ে গেছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। মূলত, পৃথিবীর কাছে অবস্থান হওয়াতেই চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্রটি শক্তিশালী ছিল৷ চাঁদেও ইলেকট্রিক কারেন্টের মাধ্যমে এই শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়।
ক্রমশ চাঁদের কেন্দ্র শক্ত হয়ে যাওয়ায়, ধীরে ধীরে চৌম্বক ক্ষেত্র তার শক্তি হারায়। সরাসরি সূর্যরশ্মি আটকানোর ক্ষমতাও কমে আসতে থাকে। বর্তমানে পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ড ৫০ মাইক্রোটেসলা, সেখানে চারশো কোটি বছর আগেই চাঁদের ম্যাগনেটিক ফিল্ড ছিল ১০০ মাইক্রোটেসলা। স্বাভাবিকভাবেই, চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্র যে পৃথিবীর চেয়ে শক্তিশালী ছিল, তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।
পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের অবস্থানেরও পরিবর্তন ঘটছে দ্রুত হারে। উত্তর মেরুর ম্যাগনেটিক পোল ক্রমশ সাইবেরিয়া অভিমুখী। তাই চাঁদের মতো পৃথিবীরও চৌম্বক ক্ষেত্র শক্তিও কখনও হারিয়ে যাবে কিনা, উঠছে সে প্রশ্নও।