“আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান…”

পর্ব - ১

বাংলা ক্যালেন্ডারে মার্কামারা দুটো দিন, ২৫শে বৈশাখ আর বাইশে শ্রাবণ। কিন্তু ২৫শে বৈশাখ নিয়ে যতটা মাতামাতি, যত ভাবনা চিন্তা, ‘হে নূতন’কে নতুনতর করে দেখার জন্য কত রকমের পরিকল্পনা, ঐতিহ্য আর আধুনিকতার চাপানউতোর - বাইশে শ্রাবণ নিয়ে যেন সেই তুলনায় মনের দুয়ার খুলে দেবার অবকাশ অনেক কম। বাইশে শ্রাবণের গান বলতে ‘আছে দুঃখ আছে মৃত্যু’, ‘জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে’, ‘চিরসখা হে’, ‘দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার’—এমন কয়েকখানার বাইরে যেন কিছু ভাবাই চলে না। কেন? মৃত্যু কি এতই ক্ষুদ্র, এতই সীমিত যে তাকে ‘শ্যামসমান’ বলা যায় না, বিরহ, বিচ্ছেদ, ক্ষয় কি এতই স্থূল যে তার মাঝে মহামিলনের আবেশ অধরা থাকে, শ্রাবণ আকাশের মেঘমেদুর বিশাল ব্যাপ্তির মাঝে কি তার অনন্ত রূপের আস্বাদ মেলে না বিচিত্র ছন্দে, ঝরঝর বর্ষণের বিরামহীন, বিপুল অস্তিত্বের বিজুলি-আলোয়? শ্রাবণ যে কবির মনোজগতে প্রেম, বিরহ, সুখ দুঃখ, সংকট ও উত্তরণের জ্ঞাপনে ও যাপনে এক অনির্বচনীয় পরিমণ্ডল রচনা করেছে তাঁর সারা জীবন ও সৃষ্টিকর্ম জুড়ে, বিশেষ করে তাঁর গানে- সে কথা কি এমন করে তলিয়ে দিতে হয় “বিস্মৃতি স্রোতের প্লাবনে”?

“কথা জিনিসটা মানুষেরই, আর গানটি প্রকৃতির। কথা সুস্পষ্ট এবং বিশেষ প্রয়োজনের দ্বারা সীমাবদ্ধ আর গান অস্পষ্ট এবং সীমাহীনের ব্যাকুলতায় উৎকন্ঠিত। সেই জন্যে কথায় মানুষ মনুষ্যলোকের এবং গানে মানুষ বিশ্ব প্রকৃতির সঙ্গে মেলে।

আজ এই ঘনঘোর বর্ষার সন্ধ্যায় প্রকৃতির শ্রাবণ-অন্ধকারে ভাষা আমাদের ভাষার সঙ্গে মিলতে চাচ্ছে। অব্যক্ত আজ ব্যক্তের সঙ্গে লীলা করবে বলে আমাদের দ্বারে এসে আঘাত করছে। আজ গান ছাড়া কোন কথা নেই।”  - ‘শান্তিনিকেতন’ গ্রন্থের ‘শ্রাবণসন্ধ্যা’ প্রবন্ধে লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর শ্রাবণের গানগুলি যেন এই জীবনবোধেরই সঙ্গীতময় প্রকাশ। 

আরও পড়ুন
ভেসে এল কান্নার শব্দ, মেয়েকে শেষবার না-দেখেই গাড়ি ঘোরালেন রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের ষোল বছর বয়সে লেখা প্রথম শ্রাবণের গানটিই ছিল বৈষ্ণব পদাবলীর অনুসরণে ‘শাঙন গগনে ঘোর ঘনঘটা নিশীথ যামিনী রে’। শ্রাবণের রাতে রাধার অভিসার-বর্ণনা। পণ্ডিতেরা বলেন, ষোল বছর বয়সে লেখা এই গানে পরিণত বয়সের রবীন্দ্রনাথের শ্রাবণ-ভাবনার সম্যকস্বরূপ উপলব্ধির প্রত্যাশা করা চলে না। রবীন্দ্রনাথ নিজেও ‘ভানুসিংহ’ নামের আড়ালে লেখা এইসব কৈশোরগন্ধী সৃষ্টি সম্বন্ধে একটু কুণ্ঠিতই ছিলেন পরবর্তী কালে। কিন্তু গান যদি তার নিজের কথা  বলতে পারে সুরে আর অভিব্যক্তিতে, তাহলে অন্যের কথার চেয়ে বরং গানের কথাই শোনা যাক। দেখাই যাক, কী আছে এ গানের মধ্যে? 

গানের শুরুতেই পাই শ্রাবণের আকাশ– সে আকাশে মেঘের ঘনঘটা, যেন উৎসবের আয়োজন। সেই উৎসব প্রিয়মিলনের, কিন্তু উৎসবের আনন্দ বুঝি ক্ষণে ক্ষণে ঢেকে যায় উৎকণ্ঠায় - উন্মাদ পবনে, যমুনার তর্জনে, প্রবল ঝঞ্ঝায় অভিসারিকার মনে প্রশ্ন জাগে, এই দুর্যোগের রাতেও কেন সেই নিষ্ঠুর কানু এমন করে তাকে ডাকে? এ গান বিভিন্ন সময়ে গেয়েছেন অনেক শিল্পীই, রবীন্দ্রসঙ্গীতের অগ্রণী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষ করে বলতে হয় কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেকর্ডিংটির কথা (১৯৪৭)। উৎকণ্ঠিতা রাধার ব্যাকুলতা আর উদ্বেগই যেন গুরুত্ব পায় তাঁর পরিবেশনে, তাই ‘মোতিম হারে বেশ বনা দে’ অংশেও লাগে এক স্নিগ্ধ গাম্ভীর্যের ছোঁয়া। সাজের প্রয়োজন নেই, তবু যেন নিয়মরক্ষার সাজ করছেন নায়িকা। ১৯৫৩ সালে ‘বউঠাকুরানীর হাট’ ছবিতে এই গানটি আবার গেয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর, ছবির প্রয়োজনে রাজসভায় মনোরঞ্জনের অনুষঙ্গে নর্তকীর কণ্ঠে রয়েছে গানটি। প্রয়োগ অনুযায়ী গানটির পরিবেশন সার্থক -- রাজনর্তকী সুলভ মোহ-আবেশ ছড়ানো কণ্ঠে অভিসারিকার চঞ্চলতা চমৎকার ফুটেছে এ গানে। কিন্তু ভানুসিংহের রাধা?

আরও পড়ুন
‘এ দেশে হতভাগা মানুষের সমস্ত প্রাপ্য দেবতা নিচ্চেন হরণ করে’, ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ

এ গান তো শুধু রাধার নয়, কবি ভানুরও। তাঁর চোখেই ধরা পড়েছে অভিসারিকা রাধার পরমা রূপ। এ গানে রাধার প্রেমাস্পদ না হয় ‘নিরদয় কান’, কিন্তু তাঁর পূজারী-প্রেমিক তো কবি নিজেই। রাধা তাঁর চোখে অখিল সোহাগিনী, বিশ্বব্যাপী মাধুর্যের হ্লাদিনী শক্তি। আর এই প্রেমের জোরেই ‘দাস’ ভানু বলতে পারেন, ‘ন জাওব বালা নওলকিশোরক পাশ’ – যেও না মেয়ে, এমন দুর্যোগের রাতে যেওনা তার কাছে। কতখানি ভালবাসা থাকলে রাধার কষ্টের কথা ভেবে তাঁকে এমন করে কৃষ্ণের কাছে যেতে বাধা দেওয়া যায়! এই প্রেম তো পূজারই নামান্তর— যে ভাব রবীন্দ্রনাথের সারা জীবন জুড়ে লেখায়, সুরে বিকশিত হয়েছে ক্রমে, নিকষিত হেম রূপে। ভাবতে অবাক লাগে, ভানুসিংহের এই রাধাকে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হল ২০০৬ সাল পর্যন্ত! সম্ভবত সত্তরের দশকে লন্ডনে নিশীথ গাঙ্গুলির বাড়িতে গানটি শুধু হারমোনিয়ামে ঘরোয়া পরিবেশে গেয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। হিন্দুস্তানি উচ্চারণ নয়, বাংলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত যেভাবে গাওয়া হয় সেভাবেই গেয়েছেন, হয়তো সচেতন ভাবেই— মিশ্র ব্রজভাষায় লেখা হলেও মূলে তো এ গান রবীন্দ্রসঙ্গীতই (কণিকার রেকর্ডিং-এও এই বাংলা ছাঁদ ধরা পড়ে, এবং তা যথেষ্টই সমাদৃত)। এই লাইভ রেকর্ডিং-এ নতুন করে যন্ত্রানুষঙ্গ যোজনা করে ২০০৬ সালে প্রকাশ করল সাগরিকা রেকর্ড কোম্পানি-- মল্লারের অনবদ্য আবহ ধরা দিয়েছে কণ্ঠে ও সঙ্গতে।  শুনলে মনে হয়, একই কণ্ঠে রাধা-কৃষ্ণ। রবীন্দ্রসঙ্গীতের অর্ধনারীশ্বর রূপ যেন সুধা হয়ে শ্রাবণের ধারার মত ঝরে পড়ে মুগ্ধ শ্রোতার শ্রবণে, মনে, প্রাণে।   

 রবীন্দ্রনাথের কাছে শ্রাবণ যেন সমগ্র বর্ষার জীবন্ত, সাকার রূপ।  শ্রাবণে তাই তিনি আরোপ করেছেন শত বরণের ভাব উচ্ছ্বাসে ভরা এক জীবন্ত সত্তা । আর তাঁর জীবনে বাইশে শ্রাবণ যে শুধু এক গভীর শোকের কারণেই স্মরণীয়, তাও তো নয়। কবি তখন শিলাইদহে।  সালটা ছিল ১৮৯৪। তারিখ বাইশে শ্রাবণ। ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরাদেবীকে চিঠি লিখেছেন কবি— “...এখানকার প্রকৃতির সঙ্গে সেই আমার একটি মানসিক ঘরকন্নার সম্পর্ক। ...জীবনের যে গভীরতম অংশ সর্বদা মৌন এবং সর্বদা গুপ্ত, সেই অংশটি আস্তে আস্তে বের হয়ে এসে এখনকার অনাবৃত সন্ধ্যা এবং অনাবৃত মধ্যাহ্নের মধ্যে নীরবে এবং নির্ভয়ে সঞ্চরণ করে বেড়িয়েছে। এখনকার দিনগুলো তার সেই অনেক কালের পদচিহ্ন দ্বারা যেন অঙ্কিত।“ (ছিন্নপত্র)

আরও পড়ুন
নিমতলায় পৌঁছোতেই পারেননি কবিপুত্র, রবীন্দ্রনাথের মুখাগ্নি করলেন কে?

১৩২৯ বঙ্গাব্দের বাইশে শ্রাবণ কবি শান্তিনিকেতনে বর্ষামঙ্গল উৎসব পালন করলেন। সকাল থেকেই সেদিন  অবিরাম ধারাপাত। 'আজ আকাশের মনের কথা ঝরঝর বাজে' গানটি সেদিনের অনুষ্ঠানে তিনি নিজকণ্ঠে গেয়েছিলেন, আবৃত্তি করেছিলেন 'ঝুলন’, ‘বর্ষামঙ্গল’, ‘নিরুপমা'- বর্ষার কবিতা। প্রতিবছর শান্তিনিকেতনের বর্ষামঙ্গল উৎসবকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ বর্ষার গান রচনা করে গেছেন, ধারাবাহিকভাবে। 

১৩৪৬ বঙ্গাব্দে বর্ষামঙ্গলের জন্য শৈলজারঞ্জন মজুমদারের অনুরোধে অনেকগুলি গান লিখে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এ প্রসঙ্গে শৈলজারঞ্জন লিখেছেন, “১৯৩৯ সন। বর্ষামঙ্গলের প্রস্তুতি চলছিল।... আমি গুরুদেবকে বললাম যে, ছেলেমেয়েরা বলছে নতুন গান চাই, পুরানো গানে ওরা আর বর্ষামঙ্গল করবে না। গুরুদেব বললেন, ‘এই অল্প সময়ের মধ্যে কি করে আর নতুন গান লেখা যায়।... পরদিন বেলা এগারোটায় গুরুদেব আমাকে ডেকে পাঠালেন। কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই নতুন লেখা একটি গান হাতে দিলেন। গানটি – ‘ওগো সাঁওতালি ছেলে।’ দ্বিতীয় গান ‘বাদলদিনের প্রথম কদমফুল’ পেলাম তার পরের দিনেই।... পরের দিন আবার কাগজে লিখে দিয়ে এলাম, ‘ইমন’, পেলামও- ‘এসো গো জ্বেলে দিয়ে যাও’ গানটি।” (‘যাত্রাপথের আনন্দগান’) এভাবেই একে একে লেখা হয়েছিল ‘আজি ঝরঝর মুখর বাদর দিনে’, ‘পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে’, ‘সঘন গহন রাত্রি’ প্রভৃতি।   

আরও পড়ুন
বোলপুরে 'পৃথ্বীরাজ পরাজয়' লিখলেন কিশোর রবীন্দ্রনাথ, ডাইরির সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেই কাব্যও

এই গানগুলির মধ্যে বিশেষ করে কয়েকটি তো বাঙালির পরম প্রিয় কয়েকজন শিল্পীর কণ্ঠে অমর হয়ে আছে। ‘এসো গো জ্বেলে দিয়ে যাও’ গানটির কথাই ধরা যাক। দেবব্রত বিশ্বাস গেয়েছেন তাঁর মন্দ্রসপ্তক-নির্ভর নিনাদে। ‘নামিল শ্রাবণ সন্ধ্যা’ গাইবার সঙ্গে সঙ্গে যেন জমাট অন্ধকারের মঝে এক পশলা বৃষ্টির আমেজ। ‘বিজন ঘরের কোণে’, ‘কালো ছায়া’ শব্দবন্ধের উচ্চারণে শ্রাবণ সন্ধ্যার নির্জনতার ছবিখানা স্পষ্ট হয়ে ওঠে একটু একটু করে। বর্ষণমুখর সন্ধ্যার অন্তরালে এই একা হতে পারার, নিজেকে খুঁজে পাবার এক গভীর চেতনা যেন মূর্ত হয়ে ওঠে তাঁর পরিবেশনায়। রবীন্দ্রনাথ নিজেই তো ইঙ্গিত দিয়েছেন, বসন্ত নিজেকে প্রকাশ করার কাল, আর বর্ষা নিজেকে অন্তরালে রাখার। ‘শুনিতে পাও কি তাহার বাণী’–- এ প্রশ্ন যেন শিল্পী করছেন নিজেকেই। আপন সত্তার মাঝে এমন করে শ্রাবণযাপন বোধহয় তাঁর মত এক স্বাভিমানী, ব্যতিক্রমী শিল্পীকেই মানায়।  

গানটি দূরদর্শনে গেয়েছেন সাগর সেন, আর আকাশবাণীতে চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়। দুটি পরিবেশনাই মনোজ্ঞ, কিন্তু গানটির কোন স্টুডিয়ো রেকর্ডিং তাঁরা করে যাননি। পরে এই গান গেয়েছেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, আশিস ভট্টাচার্য প্রমুখ।        

আরও পড়ুন
যদুভট্টের থেকে পালিয়ে বেড়াতেন রবীন্দ্রনাথ, স্বীকার করেছেন নিজের গানের সীমাবদ্ধতাও

হেমন্ত গেয়েছেন ১৯৭০ সালে। একেবারে অনাড়ম্বর অথচ অতলস্পর্শী এক লাবণ্যময় গভীরতায় ডাক দিলেন, ‘এসো গো--’ চমকে তাকাল শ্রোতা, সাড়া দিল তার সমগ্র চিত্ত – বুঝি নিজের অজান্তেই। ‘জ্বেলে দিয়ে যাও প্রদীপখানি’ গাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন আলোকিত হয়ে উঠল একলা ঘরের অন্ধকার কোণটি। এখানেও শিল্পী বহিরঙ্গে আত্মগত, একা-- কিন্তু অন্তরঙ্গে তিনি এক অপার্থিব সংলাপ রচনা করে চলেন যেন এক পরম বাঞ্ছিতের উদ্দেশে- যার জন্য তাঁর ‘নিভৃত প্রতীক্ষা’ এমন অপরূপ হয়ে ওঠে; প্রতীক্ষা শব্দের দীর্ঘ ঈ উচ্চারণে অনায়াসে ছুঁয়ে যান স্পর্শস্বর রেখাব, আর প্রত্যেক সহৃদয় শ্রোতার যেন মনে হতে থাকে, এই প্রতীক্ষা, এই আবাহন বুঝি একান্ত তাঁরই জন্য। বর্ষার রাতে বাঁশি শুনে যেমন প্রত্যেক গোপিনী ভেবেছিলেন, এ বাঁশি কেবল তাঁকেই ডাকে। এ গানে অবশ্য ‘হারিয়ে গেছে মোর বাঁশিখানি, আমি কোন সুরে ডাকি তোমারে’ – তাতে কী? শিল্পীর হৃদয়ের সুর যখন উঠে আসে তাঁর অনির্বচনীয় স্বরে, সেই সুরেলা আহবান চিনতে তো ভুল হবার কথা নয়! পথ চেয়ে থাকা দৃষ্টির বাণী যে এমন গভীর আর অমোঘ হতে পারে, সন্ধ্যার ইমন এমন করে মিলে যেতে পারে সময়ের সীমা ছাড়িয়ে অনন্তে— শ্রাবণের এই গান ছাড়া সেই বোধ বুঝি অধরা থেকেই যেত। কম্পিত বক্ষের পরশ মেখে যখন সজল হয় বাতাস, তখন মনে হয় এমন গানেই বুঝি মিশে যায় বাসকসজ্জা আর অভিসার, পুরুষ আর প্রকৃতি-- পরম মিলন ঘটে রূপকার-শিল্পী আর স্রষ্টার, স্রষ্টার সঙ্গে মহাস্রষ্টার।

চিরবিচ্ছেদের, বেদনার অন্তরালে এই নিবিড় মিলনের জন্যই তো বার বার ফিরে এসে বলা- ‘আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান।’ এ দেওয়ার কোন শেষ নেই, শেষ কথা কে বলবে?

Powered by Froala Editor