লেজবিশিষ্ট এই প্রাণীটিকে নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা কমবেশি প্রতিটি মানুষের স্মৃতিতেই লাফালাফি করে। আদ্যপ্রান্ত নিরামিষাশী এই বাঁদর গাছের এ-ডাল ও-ডাল ঘুরে ফল খেয়েই শান্ত করত নিজেদের। খুব বেশি হলে কোনো গৃহস্থের বাড়ির ছাদ থেকে শুকোতে দেওয়া খাবার চুরি করতেও সিদ্ধহস্ত ছিল তারা। ইদানীং লোকালয়ে কম দেখা গেলেও বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে এদের উৎপাত বেড়েছে বহুগুণ। বিশেষ করে পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে থাকা বাঁদরদের দৈনন্দিন খাদ্যাভাসের বিবর্তন বিস্ময়কর।
সুন্দরবনের বেশ কিছু জায়গায় দেখা গিয়েছে প্যাকেট জাতীয় খাবারে কীভাবে মন মজেছে তাদের। বিস্কুট, চিপস, ঠান্ডা পানীয় এমনকি বিরিয়ানিকেও নির্দ্বিধায় আপন করে নিয়েছে এই বাঁদরকুল। তাদের এই পরিবর্তনে গভীর চিন্তায় বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরাও। তাঁদের সবার অভিমত যে, এই পরিবর্তন একদিনে আসেনি। যেখানে বিভিন্ন গাছের শ্বাসমূল, ঠেসমূল, ফলই ছিল তাদের মেইন কোর্সে, হঠাৎ তাদের এই পরিবর্তনে দায়ী হয়তো মানুষই। পর্যটকদের ফেলে দেওয়া বিরিয়ানি বাঁদরদের খেতে দেখা গিয়েছে কদিন আগেও, এমনকি ডাস্টবিনে অবধি নেমে পড়ছে তারা; এমনি ছবি ধরা পড়েছে কদিন আগের সজনেখালিতে। শুধু সুন্দরবনই না, এই সমস্যা গোটা ভারতের বিভিন্ন পর্যটন এলাকার স্থায়ী সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে ক্ষতি হচ্ছে উভয়েরই। খাবার না পেয়ে আঁচড়ে, কামড়ে অস্থির করে তুলছে পর্যটকদের। অন্যদিকে, পর্যটকদের থেকেও অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বাঁদরেরা। খুব দ্রুত এর ব্যবস্থা না নিলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না।