‘বার’-বাড়ন্ত
প্রথম পর্ব
৬ ক্যামাকস্ট্রিট, ফোর্ট নক্স বিল্ডিং-এর ন’তলা, পাখির চোখে দেখা মধ্য কলকাতার এক বিরাট অংশ। দ্বিতীয় হুগলি সেতু, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল ছাড়াও এক বিরাট অংশের সবুজ, কলকাতা ময়দান। এমনই এক দৃশ্যের মাঝে কোথাও গিয়ে আপনি বসিয়ে দিলেন নিজেকে। একটা উঁচু চেয়ার টেনে জানলার গা ঘেঁষে বসলেন দিনের আলোয়। শহরে থেকেও শহরের একটু বাইরে, ব্যস্ততাকে বাইরে রেখে ঢুকে এলেন দরজা ঠেলে। মৃদু গান, গায়ে এসে পড়া সূর্য আসতে আসতে হাঁটা দিয়েছে পশ্চিমে। গ্লাসে অল্প স্কচে হাবুডুবু খেয়ে গলে যাচ্ছে বরফের টুকরো। সন্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে উঠছে উৎসব।
শহরে এও কি কম ভালো থাকা? সন্ধে নামলে পায়রার খোপ কলকাতায় জ্বলে উঠছে আকাশঝাড়ুর আলো। গাড়ি চলে যাচ্ছে ধোঁয়া রেখে। ঘাসের কারপেট থেকে উড়ে আসছে পাঁপড় ভাজার গন্ধ। ঘোড়ার গাড়ি চড়ে কে যেন চলে যাচ্ছে পশ্চিমে। একা একা এত মানুষ রোজ বেঁচে নিচ্ছে, জেগে উঠছে পরেরদিন। হ্যাঁ, কলকাতার উপকণ্ঠে স্কাইস্ক্র্যাপার যে এই সৌন্দর্য দিতে পারে তা আপনি জানতে পারবেন না মাঙ্কিতে না গেলে।
দিল্লি, মুম্বাই ও ব্যাঙ্গালোর বাদ দিলে পঞ্চম ব্রাঞ্চ তাঁদের কলকাতাতেই। বছর পাঁচেক কাটিয়ে নিজের এক পরিচিতি তৈরি করে নিয়েছে ‘মাঙ্কি বার’ বিকেল চারটে থেকে রাত একটা পর্যন্ত ড্রিঙ্ক সার্ভ করেন তাঁরা। পিৎজা হোক বা নুডল, একবার চেখে দেখলে ফিরে আসবেন বারংবার। স্কচের তালিকাতেও পিছিয়ে নেই এই বার। রিসনেবল দামে একটি বড় রেঞ্জ অফ অ্যালকোহল পাবেন নিজেকে ঠান্ডা করতে। ককটেল টেস্ট করতে চাইলে অবশ্যই টিক দিন ‘মাঙ্গা’-এ। পাশেই ওপেন টেরেস, সেখানে সামান্য জোড়ে গান। হুক্কা ও স্মোকিং-এর জন্য বরাদ্দ এই অংশে হাওয়া খেলে যায় সন্ধের মাথার চুল ঘেঁটে।
ধরুন উল্টোদিকের সিটে বসে থাকা মানুষটি আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে নিতে চাইছেন সন্ধের শেষটুকু। মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে যৌথ সময়ের। গ্লাসে গলে গেছে বরফ। বিল চেয়ে একটি সিগারেট ধরিয়েছেন, ফোনে কথা চলছে উবার ড্রাইভারের সঙ্গে, কেউ কি পাশে এসে দাঁড়ালো? একটা গোটা শহর অথবা এক স্নিগ্ধ প্রেমিকা...
চিত্র ঋণ - কথা ঘোষ