একে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল, তার ওপরে লকডাউন— জোড়া প্রতিকূলতায় ধাক্কা খেয়েছে থেরাপির প্রক্রিয়া। কথা হচ্ছে হিমাচল প্রদেশের। শুধু কুলুতেই রয়েছে প্রায় ১৭০০ বিশেষভাবে সক্ষম শিশু। কিন্তু সংক্রমণের আশঙ্কায় অনেক অভিভাবকই থেরাপিতে নিয়ে যাওয়ার করাতে নিয়ে যেতে। এবার তাঁদের জন্যই উদ্যোগ নিল হিমাচলের একটি সংস্থা। মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে এই সংস্থা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে থেরাপি পরিষেবা। এমন অভিনব উদ্যোগ ভারতে এই প্রথম।
দীর্ঘ ৮ মাস লকডাউনের পর ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে এই পরিষেবা শুরু করে হিমাচলের সাম্ফিয়া ফাউন্ডেশন। এখনও পর্যন্ত প্রতি মাসে প্রায় ৮০টির বেশি শিশু এবং বেশ কিছু প্রাপ্তবয়স্ক উপকৃত হচ্ছেন এই উদ্যোগে। কুলু, মানালি এবং মনিকরণ— এই তিন অঞ্চলে উপলব্ধ ‘থেরাপি অন হুইলস’ নামাঙ্কিত এই পরিষেবাটি।
এমন পরিকাঠামোর চিন্তা বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই করেছিলেন, জানান সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ শ্রুতি মোরে। তবে সম্ভব হয়নি তা। লকডাউনের আবহই যেন ত্বরান্বিত করেছে সেই পরিকল্পনাকে। সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উন্নয়ন সংস্থাও। তাঁরাই বন্দোবস্ত করে দেন একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির।
মূল থেরাপি-কেন্দ্র থেকে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী মনিকরণ ভ্যালি পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে এই ভ্যান। গাড়িতেই রয়েছে এক্সারসাইজ বল, থেরাপি টয়, অর্থোসিস। পরবর্তীতে ট্রেডমিল সংযোজনের কথাও ভাবছেন সংস্থার কর্ণধার। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রেখা ডাঃ রেখা ঠাকুর, একজন নার্স, সমাজকর্মী ও ড্রাইভার— সব মিলিয়ে চার জনের ছোট্ট দল চালিয়ে যাচ্ছেন এই কর্মযজ্ঞ। তাঁদের তত্ত্বাবধানেই মিলছে ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি কিংবা স্পিচ থেরাপির মতো পরিষেবা। প্রতি সপ্তাহে তিনদিন করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে এই মোবাইল ভ্যান। চলছে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার থেরাপি সেসন।
তবে শুধু হিমাচলই নয়, সারা ভারতের ছবিই হয়তো একই রকম। মহামারীর আবহ অসহায়তার দিকেই ঠেলে দিয়েছে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের। এমন উদ্যোগ যে হিমাচলের বাইরেও সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়বে ধীরে ধীরে, সেই ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী উদ্যোক্তারা…
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
নিজের দাড়ির চুল দিয়ে তৈরি তুলিতেই আঁকা ছবি, আন্তর্জাতিক সম্মান হিমাচলের শিল্পীর