পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর মাউন্ট এভারেস্ট। মানুষের যাতায়াত নগণ্য বললেই চলে। কিন্তু এই দুর্গম প্রকৃতিও আর রক্ষা পেল না দূষণের নাগাল থেকে। এভারেস্টের শিখর থেকে মাত্র ৪০০ মিটার নিচেই এবার খোঁজ মিলল মাইক্রোপ্লাস্টিকের।
সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন গবেষক ইমোজেন ন্যাপার। ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এই অনুসন্ধানকারী এভারেস্টের বিভিন্ন উচ্চতার বেস থেকে সংগ্রহ করেছিলেন বরফের নমুনা। আর তা পরীক্ষা করতেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্বের ব্যাপারে টের পান তিনি। সর্বোচ্চ ৮৪৪০ মিটার উচ্চতাতেও বরফ পরীক্ষায় পাওয়া যায় মাইক্রোপ্লাস্টিক। সম্প্রতি এই গবেষণা প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞান পত্রিকা ‘ওয়ান আর্থ’-এ।
ন্যাপার জানান, সারা পৃথিবীতে প্রাপ্ত সমস্ত ধরণের মাইক্রোপ্লাস্টিকের নমুনাই তিনি পেয়েছেন এভারেস্টে। আর এই ঘটনার জন্য তিনি দায়ী করেছেন মানুষের অসতর্কতা এবং অসচেতনতাকেই। সিনথেটিক ফ্যাব্রিকের তৈরি পোশাক থেকেই সংযোজিত হয়েছে এইসকল প্লাস্টিক বর্জ্যের একাংশ। এমনটাই জানাচ্ছেন ন্যাপার। কটনের ব্যবহার না করে কেন এই ধরণের পোশাকের ব্যবহার করা হচ্ছে নির্দ্বিধায়, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
কিন্তু অভিযাত্রীদের পোশাক বদলেই কি সমাধান মিলবে এই সমস্যার? ন্যাপার জানান, এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে প্রতি লিটার বরফের মধ্যে ৭৯টি মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পেয়েছেন তিনি। ক্যাম্প ১ এবং ক্যাম্প ২-তে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১২টির মতো। গবেষণার মতে, এই বিপুল পরিমাণের প্লাস্টিক বায়ুপ্রবাহের দ্বারা পরিচালিত হয়েই পৌঁছে যাচ্ছে হিমালয়ের শিখরে। দূষিত করে তুলছে সেখানকার পরিবেশকেও।
সাধারণত এই ধরণের প্লাস্টিক জলচর জীব এবং পাখিদের দেহে ভয়াবহ ক্ষতিসাধন করে। বন্ধ করে দেয় পৌষ্টিকনালীকেও। ফলে হয় কঠিন রোগ নয়তো অভুক্ত অবস্থাতেই মরতে হয় তাদের। সেই সূত্রেই বলা যায় যে হিমালয়ের দুর্গমতম পরিবেশের জীববৈচিত্র্যকেও প্রভাবিত করছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি। যার কারণে একপ্রকার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা। তবে এসব তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরও কি সচেতন হচ্ছেন চিন ও নেপালের রাষ্ট্রচালকরা? কতটা দায়িত্ব নেবেন তাঁরা আগামীদিনে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শসার খোসা থেকে প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরির দিশা দেখাচ্ছেন বাঙালি গবেষক