কঠোর পরিশ্রম আর ইচ্ছেশক্তির বশেই যে জয় করে নেওয়া যায় অভিপ্রেতকে, আরও একবার প্রমাণ মিলল তার। প্রযুক্তিবিদ্যার শিক্ষা কিংবা অটোমোবাইলে কাজ করার অভিজ্ঞতা - কোনোটিই নেই তাঁর। তবুও ব্যাটারিচালিত মোটরবাইক তৈরি করে তাক লাগালেন মির্জাপুরের ছাত্র নীরজ মৌর্য। মির্জাপুরের মাওয়াই কালানের পঞ্চশীল ডিগ্রি কলেজে বর্তমানে শিক্ষারত এই তরুণ উদ্ভাবক।
মির্জাপুরের এক সামান্য কৃষকের সন্তান নীরজ। চাষের পাশাপাশি ছোট্ট সাইকেলের দোকানে টায়ার মেরামতির কাজ করেন তিনি। কাজেই খুব কাছ থেকে দারিদ্র্যকে দেখেছেন। স্বপ্নের ব্যাটারিচালিত এই বাইক তৈরি করার সময়, প্রথম প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেই আর্থিক সংকটই। মোটরবাইকের নকশা প্রস্তুত করে ফেললেও ব্যাটারি কেনার টাকা জোগাড় করতে লড়াই করতে হয়েছে তাঁকে।
মাত্র কয়েকমাস আগে নবরাত্রির সময় দিন রাত এক করে বেশ কিছু দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছিলেন নীরাজ। সেই মূর্তি বিক্রি করেই তিনি সংগ্রহ করেন ব্যাটারির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ। তারপরও পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে সময় লেগেছে মাত্র ১ মাস।
নীরাজের তৈরি এই মোটরসাইকেলের বিশেষত্ব হল তাতে সামনের গিয়ারের পাশাপাশি রয়েছে পিছনের গিয়ারও। যা মোটরবাইককে চালিত করতে পারে বিপরীত দিকেও। শুধু এটাই নয়; একবার সম্পূর্ণভাবে চার্জ দিলে, তা একটানা ছুটতে পারে অন্তত ৫০ কিলোমিটার। গতিবেগ অন্যান্য পেট্রোলচালিত মোটরবাইকের মতোই। তবে সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব এই নতুন উদ্ভাবনা। নেই কোনো দূষণের সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন
পেরিয়ে গেছে শতবর্ষ, এখনও রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই বাইক
নয় নয় করেও নিজের সামান্য সঞ্চয় থেকে মোটরবাইক নির্মাণে ৩০ হাজার টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছেন নীরাজ। তবে ভারত সরকারের থেকে ভর্তুকি মিললে এই বাইকের দাম আরও কমাবেন বলেই জানাচ্ছেন তিনি। স্বপ্ন দেখছেন ভবিষ্যতে বহু মানুষ তাঁর তৈরি এই পরিবেশবান্ধব মোটরসাইকেলই বেছে নেবেন ব্যবহারের জন্য। কীভাবে এই বাইক বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আনা সম্ভব, সেই বিষয়েই চিন্তাভাবনা করছেন তিনি। মোটরসাইকেল প্রস্তুতির পর এও যেন এক নতুন চ্যালেঞ্জ...
আরও পড়ুন
বাঘমুখো কাঠের বাইক, প্রযুক্তিতে চমক আদিবাসীদের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
রাতের কলকাতায় ছুটে চলেছে জর্জ বিশ্বাসের 'পক্ষীরাজ' বাইক