দেশের যাবতীয় সমস্যার দিকে নজর রাখাই সরকারের কাজ। আর সেই সমস্যা যদি হয় নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্য, তাহলেও কি দায়িত্ব এড়ানো যায়? আর সেই তাড়না থেকেই এবার জাপানে তৈরি হল নতুন মন্ত্রালয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা'র উদ্যোগে তৈরি এই নতুন মন্ত্রালয়ের দায়িত্ব নাগরিকদের আত্মহত্যার প্রবণতা বিষয়ে নজর রাখা। আর মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন তেৎসুসি সুকামোতো।
জাপানের আত্মহত্যার ঘটনা বিগত কয়েক দশক ধরেই আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনার বিষয়। আর করোনা পরিস্থিতিতে সেই সমস্যাই আবার নতুন করে ঘনীভূত হয়ে উঠেছে। কিছুদিন আগেই জাপান সরকারের রিপোর্ট ঘিরে তৈরি হয়েছিল চাঞ্চল্য। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের থেকে ২০২০ সালে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। শুধু অক্টোবর মাসেই ১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। যার বড়ো অংশই মহিলা।
ব্রিটিশ সরকারের দেখানো পথ ধরে একাকিত্ব ও অবসাদ মোকাবিলার জন্য জাপানে বিশেষ ক্যাবিনেট তৈরি হয় জানুয়ারি মাসেই। আর সেই ক্যাবিনেটেই ‘একাকিত্বের মন্ত্রী’ হিসাবে শপথ নিয়ে সুকামোতো জানিয়েছেন, মানুষের একাকিত্বের মূল অনুসন্ধান করাই তাঁর প্রাথমিক কাজ। বিশেষ করে মহিলাদের একাকিত্বের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে জানিয়েছেন, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শিশুদের অবসাদের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। কারণ শিশুরাই সমাজের ভবিষ্যৎ।
অবশ্য জাপানে প্রতি বছর বাড়তে থাকা আত্মহত্যার প্রবণতার পিছনে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতাকেই দায়ী করে আসছেন মনঃস্তাত্বিকরা। বিশেষ করে মহিলাদের স্থায়ী জীবিকার অভাব অবসাদ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের যৎসামান্য নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তও সমালোচনার মুখে পড়েছে বারবার। এর মধ্যে নতুন মন্ত্রীসভা কতদূর সাফল্য পাবে, সে-বিষয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তবে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে অবশেষে গুরুত্ব দিয়ে দেখে সত্যিই এক ইতিহাস তৈরি করল জাপান।
আরও পড়ুন
ছোট্ট সাইবার ক্যাফেতেই রোজের সংসার, একাকিত্বের বিরুদ্ধে জাপানি দম্পতির লড়াই
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শুধুমাত্র তাঁর বই নিয়েই আস্ত লাইব্রেরি; হারুকি মুরাকামি-কে বিরল সম্মাননা জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ের