সংস্কারের পথে ১৭টি নদী এবং ৫৬টি খাল, দূষণ রোধে সক্রিয়তা রাজ্যের

টালি নালার সামনে মিনিট পাঁচেক দাঁড়ালেই প্রাণ হাতে চলে আসবে যে কারোর। দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসার জোগাড় হবে। কিন্তু এই টালি নালা দিয়েই একসময় চলত নৌকা। বর্তমান চেহারা দেখা তা আন্দাজ করা বেশ কঠিন। শুধু টালিনালা নয়, বাংলার বহু খালও পরিবহণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত এককালে। কিন্তু দূষণে তাদের অবস্থা ক্রমশ তলানিতে। দূষণের শিকার রাজ্যের বিভিন্ন নদীগুলিও। এবার এই নদী এবং খালগুলির স্বাস্থ্য ফেরাতেই উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।

গঙ্গা, তিস্তা, দামোদর, কাঁসাই, মহানন্দা, রূপনারায়ণ-সহ রাজ্যের মোট ১৭টি নদীকে অত্যন্ত কলুষিতের তকমা দিয়েছিল জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। আর তাতেই নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। পরিবেশ আদালতের নির্দেশে শুরু হল রাজ্যের খাল এবং নদীগুলির দূষণমুক্তির প্রকল্প। এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে রাজ্যের ৩৩টি পুরসভাকে। ইতিমধ্যেই এই কর্মযজ্ঞের জন্য ডাকা হয়েছে টেন্ডার। 

গঙ্গার দূষণ রোধ করতে গেলে আবশ্যিকভাবেই প্রয়োজন গঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন খাল এবং নালাগুলির সংস্কার। এবার সেই লক্ষ্যেই হাঁটছে সরকার। ভাটপাড়া খাল, প্রতাপনগর খাল, চন্দননগর ড্রেন, ডিভিসি খাল, বালি খাল, বাঘের খাল সহ মোট ৫৬টি নিকাশি ব্যবস্থার বায়োমাইনিং শুরু হবে খুব শীঘ্রই। এমনটাই জানাচ্ছেন পুর ও নগরোন্নায়ন দপ্তর। বাড়ানো হবে নাব্যতা। পাশাপাশিই আগামী দু-তিন বছরের মধ্যেই শহরের নিকাশি ব্যবস্থার খোল-নলচে বদলে ফেলা হবে আগাগোড়া। পুর এলাকাগুলিতে বসতে চলেছে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। আবর্জনা-মিশ্রিত নর্দমার জল আগে শোধিত করে তারপর তা নির্গত হবে গঙ্গায়। সেক্ষেত্রে বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণও।

পুরো প্রকল্পের খরচের দায়ভার বহন করবে কেন্দ্র সরকারই। তবে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সংস্কারে উত্তোলিত পলিমাটির ব্যবস্থাপনা। এই বিপুল কর্মকাণ্ডে উত্তোলিত পলিমাটি কোথায় ফেলা হবে তা নিয়েই চিন্তিত আধিকারিকেরা। ছোট পুরসভাগুলিতে এত পরিমাণ পলি ফেলার মত উপযুক্ত জায়গার অভাব রয়েছে। গতবার বাধ্য হয়েই ধাপার মাঠকে বেছে নিতে হয়েছিল আধিকারিকদের। তবে এইবার তার ব্যবস্থা কোথায় হবে, তা নিয়ে ধন্দ কাটেনি এখনও...

আরও পড়ুন
কলকাতার গঙ্গায় আবার দেখা গেল শুশুক, উচ্ছ্বসিত পরিবেশবিদরা

Powered by Froala Editor