আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে রুক্ষ আর প্রাণহীন বালিয়াড়ি। কিন্তু সেই বালিই যে প্রতিবছর আছড়ে পড়ে আমেরিকার বুকে, এখবর অনেকেই রাখেন না। প্রতি বছরের মতো এবারও সাহারা থেকে ধুলোর ঝড় রওয়ানা দিয়েছে। এবং এবারের পরিস্থিতি অন্যবারের থেকে বেশি ভয়ানক হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি নাসার একটি স্যাটেলাইট প্রেরিত ছবিতে ধরা পড়েছে সেই ভয়ানক ধুলোর ঝড়ের দৃশ্য।
আবহাওয়াবিদদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঝড়ের সামনের অংশ এগিয়ে গেলেও এখনও তার অন্তিম অংশের কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি। ফলে ঝড়টি আকারে কতটা বড়ো, তা কল্পনা করাও কষ্টকর বলে মনে করছেন তাঁরা। অন্যদিকে এই এক সপ্তাহে ঝড়ের সামনের অংশ এগিয়ে গিয়েছে ক্যারিবিয়ান সাগর পর্যন্ত। অর্থাৎ মোট অতিক্রান্ত এলাকা আয়তনে সম্পূর্ণ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের মিলিত আয়তনের থেকেও বেশি। আর এতো বড়ো ধুলোর ঝড় মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে যথেষ্ট তাণ্ডব চালাতে পারে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতি বছরই বসন্তের শেষে সাহারা মরুভূমি থেকে আগত ঝড়ের কারণে কুয়াশা এবং দৃশ্যাল্পতা দেখা যায় আমেরিকায়। তবে সেইসঙ্গে মানুষের জন্য উপহার হিসাবে থাকে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য। কিন্তু এবছর যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা, তাতে অ্যাস্থমা এবং সিওপিডি রোগীদের অবস্থা বেশ শোচনীয় হয়ে উঠতে পারে। নাসার বিজ্ঞানীদের মতে, সাহারা মরুভূমি থেকে আগত এই ধুলোর ঝড় দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকার বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বিশেষভাবে জরুরি। আমাজনের জঙ্গলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের সরবরাহ করে থাকে এই ঝড়। আবার আমেরিকার ভূখণ্ডে মাটির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায় ঝড়ের ফলে। কিন্তু মাঝেমাঝে পরিস্থিতি বিপদের সংকেত দেয়। ঠিক তেমনটাই ঘটতে চলেছে এবছর। ধুলোর প্রভাবে শুধু বায়ুমণ্ডলের অবস্থাই সংকটে পড়বে না, পাশাপশি মেক্সিকোর উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রচুর বিষাক্ত শৈবালের জন্ম হবে বলে আশঙ্কা করছে নাসা। আর এর ফলে যে জলজ বাস্তুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি হবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
আবার কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা আমেরিকায়, পুলিশের গুলিতে নিহত রাশইয়ার্ড ব্রুকস