দাঙ্গার আগুন থেকে বাঁচতে দেশছাড়া সকলেই। বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েও আগুনের হাত থেকে রেহাই পেলেন না রোহিঙ্গারা। সোমবার বিকেলে কক্সবাজারের বালুখালীতে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডে ভষ্মীভূত হয়ে যায় বেশ কয়েকটি শিবির। আগুনে ১০ হাজারের বেশি বাড়ি পুড়ে গিয়েছে এবং প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসন।
মায়ানমার থেকে ধর্মীয় দাঙ্গার ফলে বিতারিত হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছেন বড়ো অংশের রোহিঙ্গা জনজাতির মানুষ। বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে মোট ৩৪টি শিবির। এর মধ্যে ৮ নম্বর শিবিরে প্রথম আগুন লাগে। সোমবার বিকাল ৫টা নাগাদ আগুন দেখতে পান মানুষ। দেখতে দেখতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের শিবিরেও। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দমকলের চারটি ইঞ্জিন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রায় পৌনে ৫ ঘণ্টা ধরে দমকল, সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবীদের যৌথ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সকাল হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকার্য। ইতিমধ্যে ৭ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর দমকলসূত্রে। আগুনের আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে গিয়ে ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
আগুন লাগার উৎস সম্পর্কে এখনও সঠিক কিছু জানা যায়নি। তবে মনে করা হচ্ছে কোনো গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন লেগেছে। আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুণর্বাসনের বিষয়টিতেই গুরুত্ব দিতে চাইছে প্রশাসন। তাঁদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ থেকেই রান্নার ব্যবস্থাও শুরু হবে। মনে করা হয় বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির এই রোহিঙ্গা শিবির। করোনা বিপর্যয়ের সময় বাংলাদেশ প্রশাসনকে রোহিঙ্গাদের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে। আবারও তাঁদের বিপদে প্রশাসনের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের প্রশংসা জানিয়েছে ইউনেস্কোও।
Powered by Froala Editor